উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত করার সে কি প্রাণান্তকর চেষ্টা! স্বাধীনতা দিবসে লাখো কণ্ঠের সঙ্গে সুর মিলিয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়ানো। কাল ম্যাচের আগে কণ্ঠস্বরে পুরো জাতীয় সংগীত বাজানো। ম্যাচের আগে ঘণ্টায় ঘণ্টায় ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠক কিংবা আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সুখস্মৃতির ম্যাচগুলো বারবার দেখানো। উদ্দেশ্য, ক্রিকেটাররা যেন উজ্জীবিত হন। উদ্দীপ্ত হন। ফিরে পান আত্দবিশ্বাস। কত আয়োজন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি মুশফিকুর রহিমদের। সেই পুরনো, মলিন চেহারাই দেখা গেছে টাইগারদের। শ্রীলঙ্কা সিরিজ দিয়ে যে ব্যর্থতার শুরু, কাল ভারতের বিপক্ষেও তা বজায় ছিল। খেলা দেখে মনে হয়েছে, ব্যাটসম্যানরা যেন ব্যাটিং করতে ভুলে গেছেন। তারপরও শেষ দিকের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের সম্মানজনক ইনিংস গড়েন টাইগাররা।
আগের দুই ম্যাচে শোনানো হয়েছিল মিউজিকের জাতীয় সংগীত। কাল পরিবেশিত হয় কণ্ঠস্বরের জাতীয় সংগীত। মুশফিকরা তাতে গলা মেলান। ক্রিকেটারদের আত্দবিশ্বাসী করতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার পঁচিশেক ক্রিকেটপ্রেমীও সুর মেলান। এমন উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু কোথায় কি? টস হেরে খেলতে নেমে ব্যাট করাই ভুলে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসানরা। অবশ্য ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম ওভারে তিন চারে ১৩ রান নেওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছিলেন অনেকেই। ওই পর্যন্তই। তৃতীয় ওভার পর্যন্ত ভালোই খেলেছেন দুই ওপেনার তামিম ও এনামুল হক বিজয়। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলে স্পিনার রবীচন্দন অশ্বিনকে খেলবেন, খেলবেন না করতে গিয়ে স্লিপে সুরেশ রায়নাকে ক্যাচ দেন তামিম। আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে বিস্ময়ের জন্ম দেন শামসুর রহমান শুভ। ইনিংসের প্রথম বলেই সুইপ খেলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন রোহিত শর্মাকে। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা টাইগারদের মূল ভরসা সাকিব ফিরে যান পরের ওভারের প্রথম বলেই আলগা শটস খেলে। ২১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর এনামুল হক বিজয় ও অধিনায়ক মুশফিক চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৪৬ রান যোগ করে বিপর্যয় সাময়িকভাবে সামাল দেন। দলীয় ৬৭ রানে অধিনায়কের বিদায়ের দুই ওভার পর সাজঘরে ফিরেন এনামুল ব্যক্তিগত ৪৪ রানে। শেষ দিকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাসির হোসেন চেষ্টা করেন দলকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যেতে। মাহমুদুল্লাহ ২৩ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮২ রান। স্বাগতিকদের বেঁধে রাখেন দুই স্পিনার অমিত মিশ্র ও অশ্বিন। অশ্বিন ১৫ রানে ২টি এবং মিশ্র ২৬ রানে নেন ৩ উইকেট।
ভারতের বিপক্ষে এর আগে বাংলাদেশ যে একটি মাত্র টি-২০ ম্যাচ খেলেছিল, সেটা ছিল ২০০৯ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে। সেবার ভারতের ১৮০ রানের জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৫ রান করেছিল। টি-২০ বিশ্বকাপে টাইগারদের সর্বোচ্চ রান পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১২ সালে ৬ উইকেটে ১৭৫।