বুধবার, ১ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সামার আউটফিট

সামার আউটফিট

♦ মডেল : সাথী ♦ ছবি : মনজু আলম

প্রতিবছরই নতুন ট্রেন্ড যুক্ত হয় ফ্যাশন ধারায়। ফ্যাশনসচেতন তরুণীরা সিজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওয়্যারড্রোবও সাজান নতুন করে। নিজেকে ট্রেন্ডি রাখতে পছন্দ করেন তরুণীরা।  গ্রীষ্মের গরমের দিনগুলোয় তাই প্রয়োজন সময়োপযোগী পোশাক। কেমন হবে গরমের দিনে আউটফিট! রইল তার বিস্তারিত...

 

যাপিত জীবনে গরম এখন চরমে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হলেও কাটছে না গরমের দাপট। এ সময়টায় ঘরে-বাইরে কেমন পোশাক পরবেন তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন অনেকেই। অনেকে আবার গরমে আরাম পেতে খোঁজেন হালকা ধরনের আউটফিট। বলে রাখা ভালো- হালকা রং, পাতলা কাপড়, আরামদায়ক কাটের পোশাক গরমের জন্য আদর্শ। তবে গরমে আরাম পেতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।

দেশীয় কিংবা পাশ্চাত্য যে পোশাক পরুন না কেন, সবার আগে দরকার পোশাকের আরাম। সহজে ঘাম শুষে নেয়, বাতাস চলাচল করে, ওজনে হালকা এবং তাপ থেকে সুরাহা দেয়- এমন তন্তুর পোশাক নির্বাচন করা প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ‘বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্প বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহমিনা রহমান বলেন, এই সময়ে সুতি, লিনেন, সিল্ক, পাতলা খাদি ইত্যাদির পোশাক বেশ আরামদায়ক। তাছাড়া এসব তন্তুর যত্ন নেওয়াও বেশ সহজ। গরমের মৌসুমে পোশাকের রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। গাঢ় ও কালো রঙের ফ্রেব্রিক তাপ শোষণ করে বেশি। তাই গরম বেশি লাগে। অন্যদিকে, হালকা রঙের তাপ শোষণ ক্ষমতা কম ও চোখে দেখতেও প্রশান্তি লাগে।

 

গরমের উপযোগী ফেব্রিকস হলো সুতি, শিফন, ক্রেপ, জর্জেট, সিল্ক, লিনেন, ভালো মানের নেট। সুতির কাপড় সব থেকে আরামের হলেও সব জায়গায় মানায় না। শিফনের কাপড় এ ক্ষেত্রে হতে পারে আদর্শ। শিফনের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজে এক ধরনের আভিজাত্য খুঁজে পাওয়া যায়। এ ছাড়া মানিয়ে যায় দিনে ও রাতে দুই সময়েই। গরমে সুতির পাশাপাশি দাওয়াতে শিফনের পোশাক আকর্ষণীয়। কাপড় নরম অথচ চকচকে ভাব থাকে। হুটহাট বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও শিফন কাপড় শুকিয়ে যায় তাড়াতাড়ি। তবে সব সময় ব্যবহার করা যাবে না। সব সময় ব্যবহারের জন্য জর্জেটের কাপড় পরতে পারেন। তবে পাতলা বলে জর্জেট পোশাক অনেকেই পরতে আরামবোধ করেন না। এ ক্ষেত্রে শিফন, জর্জেট কিংবা সফটনেটের কামিজ বানালে ভিতরের শেমিজটা পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। শিফন শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের দৈর্ঘ্য একটু বাড়িয়ে করা যায়। গরমের জন্য সুতির কোটা ও পাতলা সাটিনের শাড়িও আরামদায়ক। কাজের ক্ষেত্রে সুতার কাজকে প্রাধান্য দিলে পোশাকটি ভারী মনে হবে না। তবে চুমকি, পুঁতি কিংবা জারদৌসির কাজের পোশাক এড়িয়ে যেতে হবে গরমের এ সময়টাতে। দিনের বেলায় পিচ, লেবু, সাদা, প্যাস্টেল রংগুলো বেছে নিতে পারেন।

গরমে আরামদায়ক আউটফিটের বিকল্প নেই। ফ্যাশন হাউসগুলোও কমবেশি গরমের পোশাক নিয়ে এসেছে। অধিকাংশ ডিজাইনার ফেব্রিকস ও কাটে গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যান্ড ও ননব্যান্ডের মেয়েদের গরমের পোশাকে আরও তালিকায় আছে লেইসের টপ, সুতির নানা কাটের টপ, সিঙ্গেল কামিজ, কুর্তা, লং শার্ট। স্লিভলেস ও হাফ স্লিভ লং ড্রেস। গরমে টিউনিক, টপস, টিউনিক শার্ট, স্কার্ট, ফতুয়া, ম্যাক্সিড্রেস বা কুর্তা বেছে নিতে পারেন অনায়াসে। প্যান্টটপ পালাজ্জো, টিউলিপ, এক ছাঁটে তৈরি স্ট্রেট প্যান্ট, ক্যাপ্রি প্যান্ট, সিগারেট প্যান্ট, গ্যাবার্ডিন, জিন্সসহ যে কোনো ধরনের বটমের সঙ্গেই মানিয়ে যায়। টপস, লং স্কার্ট, টিউনিক, কেইপ, ম্যাক্সিড্রেসে ঘুরে-ফিরে এখন লং প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। প্রজাপতি প্যাটার্ন টিউনিক খুব চলছে। বেশি ঘেরের ফোলানো লং স্কার্ট আর সেমি লং টপস দারুণ জনপ্রিয়। হাঁটু সমান বা তার থেকে লম্বা টপসও এখন অনেকেই পরছেন। কোমরে কুঁচি, প্লিট, ইলাস্টিক, বেল্ট ব্যবহারে ভিন্নতা আনা হয়েছে অনেক পোশাকে। ফ্লোরাল প্রিন্টের সুতি লং স্কার্ট এ আবহাওয়ায় আরাম দেবে। হালফ্যাশনে টিউনিক, টপস, টিউনিক শার্ট, পালাজ্জোতে এসেসট্রিক কাট অর্থাৎ পোশাকের পিছনে লম্বা এবং সামনের খাটো কাট ট্রেন্ডি কাট হিসেবেও পরিচিত। টপস ও কুর্তিতে গর্জিয়াস লুক আনতে ব্যবহার হচ্ছে ব্লক, লেইস ও পাথরের ব্যবহার। হাতার ক্ষেত্রে রয়েছে কোল্ড শোল্ডার, অফ শোল্ডার, বেল বটমসহ আরও নানা ধরনের হাতা! নতুনত্ব এসেছে নেক লাইনেও। বড় গোল গলা থেকে শুরু করে বোট নেক, ব্যান্ড কলার, হাইনেক সবই পাওয়া যাবে। কুর্তি, টপস, টিউনিক ও ফ্রকে বেড়েছে ফ্লেয়ার এবং ফ্রিলের ব্যবহার। ওয়েস্টার্ন ফেব্রিকের সঙ্গে চাইলে স্কার্ফ বা ফেন্সি ওড়না ব্যবহার করে নতুনত্ব আনতে পারেন। তবে এ ধরনের আউটফিট পরিধানের আগে মনে রাখতে হবে- রুচি, সংস্কৃতি ও সমাজে গ্রহণযোগ্য কি না এবং মানাচ্ছে কি না।

 

লেখা :  ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর