পদ্মার বাংলা মাসের হিসাব অনুযায়ী এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার বাহিরচর এলাকায় গতকাল মাছ ধরার জন্য নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন অর্ধশত জেলে। জানতে চাওয়া হয় জালে কেমন ইলিশ ধরা পড়ছে। উত্তরে কয়েকজন জেলে উত্তর দেন, আহারে পদ্মার ইলিশ!
জেলেরা বলেন, এক সময় প্রতি খেওয়ে দুই থেকে তিন মণ করে ইলিশ পাওয়া যেত। জাল তুলতে কষ্ট হতো। অথচ এখন সারা দিনে খুবই কম ইলিশ পাওয়া যায়। ভাগ্যচক্রে সর্বোচ্চ সারা দিনে ১০ থেকে ১৫ কেজি ইলিশ পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ জেলে তিন-চার কেজি করে ইলিশ পেয়ে থাকেন। অনেক জেলে খালি হাতে বাড়িতে আসেন। বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের প্রদীপ হালদার (৬২) নামে এক জেলে বলেন, সামনের কার্তিকে ৩০ বছর হবে মাছ ধরার বয়স। ১৯৮৮ সালের বন্যার পর পদ্মায় ইলিশের আকাল শুরু হয়েছে। আর সোনালি দিন ফেরেনি। তিনি আরও বলেন, পদ্মায় আগে ইলিশ ধরার জাল ভিন্ন ছিল। এক নৌকায় শুধু ইলিশের জালই থাকত। এখন নৌকায় বিভিন্ন রকমের জাল থাকে। কোনোমতে জীবিকা চলছে। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেলে অভিযোগ করে বলেন, পদ্মায় ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছ ব্যবসায়ী মো. চান্দু মোল্লা বলেন, দৌলতদিয়াতে তেমন ইলিশ পাওয়া যায় না। আড়তে ৩০ থেকে ৫০ কেজির মতো ইলিশ পাওয়া যায়। কোনো জেলে ১০ কেজি, কেউ ২ কেজি ইলিশ নিয়ে আড়তে আসেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইলিশ এখন তুলনামূলক কম পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ পদ্মায় ইলিশ আসতে পারে না। নদীতে বিভিন্ন স্থানে চর পড়েছে। বর্তমান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন কেন পদ্মায় ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না তার কারণ খুঁজে বের করতে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি পদ্মায় ইলিশের সুদিন আসবে।