আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগের পর তাঁকে দীর্ঘ সময় ভারতের রাজধানী দিল্লিতে থাকতে হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো নানা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে বহুল প্রচারিত আনন্দবাজার, ইন্ডিয়া টুডে, আজকাল, এনডিটিভি, পিটিআইসহ প্রায় সবগুলো মাধ্যমেই এ বিষয়ে মতামত তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোর বিবরণ অনুযায়ী, বাংলাদেশের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ভারতে থাকতে হতে পারে। তবে তা রাজনৈতিক আশ্রয়ে নয়, ভিসার মাধ্যমে থাকা হতে পারে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটন থেকে তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও বলেছেন, তার মা আপাতত ভারতেই থাকছেন। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেছেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হলে এবং অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলে শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন।’ তিনি এও উল্লেখ করেন, দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের জন্য এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি বিএনপির সঙ্গে কাজ করতেও রাজি আছেন।
একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দিন ভারতে থাকতে পারেন বলে শীর্ষ সরকারি সূত্রে জানা গেছে। তবে অবস্থানটি ভিসার ভিত্তিতে হবে, রাজনৈতিক আশ্রয় বা শরণার্থী হিসেবে হবে না। সরকারি সূত্রের বরাতে এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কোনো দেশে তাঁর (শেখ হাসিনার) নিরাপদ প্রস্থানের বিষয়টি এই মুহূর্তে কাজ করছে না। ভারতে কোনো রাজনৈতিক আশ্রয় বা শরণার্থী আইন নেই। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের আইন তৈরি করিনি। সরকারের আইনগত অবস্থান হলো, আমরা কাউকে শরণার্থী বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের মর্যাদায় রাখতে পারি না। দালাই লামা এখানে আছেন সরকারি নীতির কারণে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন, সেটি আপাতত বাতিল করা হয়েছে। কারণ যুক্তরাজ্য এ ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রও তাঁর ভিসা বাতিল করেছে। হাসিনাকে আশ্রয় না দিতে যুক্তরাজ্যের ওপর ইউরোপের অন্যান্য দেশও চাপ দিচ্ছে। তবে ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে বলেছে যে, যতদিন পর্যন্ত তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক না করছেন, ততদিন পর্যন্ত তিনি ভারতেই অবস্থান করতে পারবেন।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর সহযোগী সংস্থা নিউজ-১৮ গত ৯ আগস্ট জানিয়েছে, ‘ক্ষমতাচ্যুত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আপাতত ভারতেই থাকবেন। তবে তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেবেন না। এর বদলে ভারতের ভিসার মাধ্যমে দেশটিতে অবস্থান করবেন।’ নিউজ-১৮ বলেছে, ‘শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যাপারে আমরা আমাদের সূত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে দীর্ঘ সময়ের জন্য অবস্থান করতে যাচ্ছেন।’