বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের বিদ্যমান ট্রাফিক পুলিশের যে সংস্কৃতি ছিল অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অবৈধ অর্থ উপার্জন এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্রাফিক বিভাগ অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। আমরা লক্ষ্য করছি যে, আগে তারা যেভাবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতেন সেই তুলনায় দায়িত্ব পালনে এখন তারা উদাসীন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ মাঠ থেকে উঠে যায়। তখন আমরা একদম পুলিশশূন্য হয়ে পড়ি। আগে এমনিতেই আমরা নানাভাবে পুলিশকে ম্যানেজ করে চলার চেষ্টা করতাম আর পুলিশ যখন উঠে গেল সেই সুযোগটি সবাই নিয়ে নেয়। যান্ত্রিক, অযান্ত্রিক যানবাহন, যে যানগুলো গলির মধ্যে থাকত এবং যেগুলো উপশহরে চলত সবাই এই সুযোগে মূল সড়কে ঢুকে পড়ে। জাতীয় মহাসড়কে এবং শহরের প্রধান সড়কে চলাচল নিষিদ্ধে যানের জন্য উচ্চ আদালতের একটি আদেশ এখনো বিদ্যমান আছে। এটি লঙ্ঘন করে চালকরা প্রধান সড়কে চলে আসেন। কারণ এগুলো দেখার কেউ নেই। এই অবস্থায় সে সময় আমাদের শিক্ষার্থীরা কারিগরি কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া দেশপ্রেমের তাগিদে সড়কের দায়িত্ব নেন। এতে সাফল্যের পাশাপাশি ছোটখাটো কিছু ত্রুটি হয়। এর পর বেশকিছু দিস পর ট্রাফিক পুলিশ আবার সড়কের দায়িত্ব বুঝে নিলেও তাদের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, বিগত সরকারের পতনের পরই যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক, অবৈধ, নিবন্ধনবিহীন এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহন সমান্তরালভাবে সামনে চলে এসেছে। তারা প্রধান সড়কও দখলে নিয়েছে। এ কারণে এখন সড়কে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আগে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য লাইনম্যানের নামে যারা রাস্তায় থাকতেন, যারা চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের কিছু স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর সড়কে এই বাহিনীকেও দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা পেয়েছি, তার এখন এই খাতে যারা কাজ করেন, পরিবহন খাতে আরও যে নেতৃবৃন্দ আছেন এ ছাড়া আরও অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের নিয়ে একটি পরামর্শ সভা করে জরুরিভিত্তিতে আমাদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যায় এবং কোন পদ্ধতিতে আমরা এই বিশৃঙ্খল অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসি তার উপায় বের করে জরুরিভিত্তিতে অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে মাঠে নামা উচিত। আমি পরামর্শ দেব জরুরিভিত্তিতে অযান্তিক ও যান্ত্রিক যানবাহনকে আলাদা করে প্রধান সড়কে কেবল যাদের রুট পারমিট আছে সেই পারমিটধারী যানবাহন প্রধান সড়কে চলবে। আর পারমিটবিহীন যানগুলোকে সড়ক থেকে আলাদা করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে সড়কে একটি শৃঙ্খলা ফেরানো সহজে সম্ভব।