২৬ জানুয়ারি, ২০১৯ ২০:৩০

রবিবার চট্টগ্রামে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

রবিবার চট্টগ্রামে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী

ফাইল ছবি

দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো রবিবার সকালে চট্টগ্রামে যাচ্ছেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। নতুন রেলমন্ত্রীকে চট্টগ্রামে বরণের পাশাপাশি চলছে তৃনমূল রেল প্রশাসনের বির্তকিতদের মধ্যে আতঙ্ক-নানাবিধ গুঞ্জনও। 

রেলওয়েসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নতুন মন্ত্রীরা দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম মন্ত্রী সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দুর্নীতি, অনিয়মসহ বিভিন্ন অপকর্ম না হয় সে দিকে সচেতন থাকার নির্দেশনা দেন। তাছাড়া রেলওয়েসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আলোকেই রেলওয়েকে দুর্নীতিমুক্ত করতে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা দিয়েছেন নতুন রেলমন্ত্রী।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন সরকারের নতুন রেলপথ মন্ত্রী এ্যাড. নূরুল ইসলাম সুজন দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো রেলের ক্রীড়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চট্টগ্রামে যাচ্ছেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রেলপথ মন্ত্রী। 

রেলমন্ত্রীর আগমনে চট্টগ্রামের রেলওয়ে হেড কোর্য়াটার সিআরবি, রেলওয়ে স্টেশনসহ রেলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, নতুন মন্ত্রীকে বরণ করতে প্রশাসন, রেলশ্রমিকলীগ, আইনজীবী নেতাদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে রেলমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে রেল মন্ত্রণালয় ও রেল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এতে সিআরবিতে মন্ত্রীর সাথে বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সাথে সমন্বয় সভাও হবে। তাছাড়া মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবেও থাকছেন কয়েকজন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রেল সংশ্লিষ্টরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রামসহ রেলের বিভিন্ন অঙ্গনে দখল-বেদখলের রাজত্ব, সিন্ডিকেট ঠিকাদার গ্রুপ, দীর্ঘ বছর ধরেই একই পদে থাকা চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারি, অবৈধ দখলদার চক্ররা নতুন মন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর রীতি মতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। নতুন রেলমন্ত্রী এসব বিষয়ে কি ভূমিকা রাখবেন, নাকি কঠোর কোনো নির্দেশনা আসছে কিনা, পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পদ জিএমসহ শীর্ষ বিভিন্ন পদে বির্তকিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে সরকারের নানাবিধ কর্মকাণ্ডকে আরো গতিশীল করতে যোগ্য কর্মকর্তাদেরও চেয়ারে বসানোসহ নানাবিধ বিষয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে।

তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে, রেলঅঙ্গনে রয়েছে জামায়াত-বিএনপি কানেকশনের চিহ্নিত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী, চিহ্নিত ঠিকাদারের বিরুদ্ধে রয়েছে নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানাবিধ অভিযোগ। যারা দীর্ঘ বছর ধরেই একক আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। চিহ্নিত ঠিকাদার, কর্মকর্তাসহ নানাবিধ শক্তির কারণে কারো বিরুদ্ধে কোনো ধরনের কথাও বলতে পারেন না বদলি ও নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্কে। এসব বিষয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও নানাবিধ তথ্য প্রমাণ রয়েছে।

দায়িত্ব নিয়ে রেল মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে, সেভাবেই রেলওয়েকেও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতেই চলবে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। রেলওয়ের চলমান সকল কপ্রল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করার ব্যাপারে কাজ করা হবে।

রেলওয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, দেশে চলমান উন্নয়ন ধারাবাহিকতার মধ্যে রেলওয়ে সেক্টরেও একাধিক প্রকল্পসহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে। একই সাথে জনবল সঙ্কটের কারণে চলছে বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ প্রক্রিয়াও। অতীতে এসব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে জিএম ইউসুফ আলী মৃধাসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা দুদকের মামলার আসামি হয়ে জেলেও গেছেন। এখনও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীসহ (আরএনবি) অনেকগুলো নিয়োগের তদন্ত চলমান রয়েছে। বর্তমান সময়ে নিয়োগ বাণিজ্য, চলমান টেন্ডার, কারণে অকারণে নানা কৌশলে বদলি আতঙ্ক, সরকার বিরোধী সুবিধাভোগী কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে আছেন নানাভাবে।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর