১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ১৯:০৪

দুর্মূল্যের বাজারেও ডাস্টবিনে পিয়াজের পচন নিয়ে বিস্ময়!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দুর্মূল্যের বাজারেও ডাস্টবিনে পিয়াজের পচন নিয়ে বিস্ময়!

গোটা দেশে একদিকে চলছে পিয়াজ সরবরাহের মারাত্মক সংকট, তার উপর গত প্রায় দেড় মাস ধরে চলছে দুর্মূল্যের বাজার। এই দুয়ে যখন সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে, ঠিক তখনই চট্টগ্রাম নগরীর খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন ডাস্টবিনে ও ফিরিঙ্গীবাজার এলাকার কর্ণফুলী নদীতে বস্তা বস্তা পচা পিয়াজ ভাসছে। এতে নগরের সচেতন মহল বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা জানান, গত তিনদিন ধরে খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেটের গুদাম থেকে ফেলা ১৫ থেকে ১৬ মেট্রিকটন পচা পিয়াজ তারা অপসারণ করেছেন।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম চ্যাপটারের সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্র এসব পিয়াজ মজুদ করে রেখেছিলেন। মজুদ করা পিয়াজ পচে যাওয়ায় সেগুলো এখন আবর্জনার স্তুপে ফেলা হচ্ছে।

এদিকে, খাতুনগঞ্জের পিয়াজ ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের গুদামে মজুদকৃত কোনো পিয়াজ নেই। মিয়ানমার থেকে যেসব পিয়াজের চালান এসেছে, সেই চালানের পচা পিয়াজগুলো ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনো ইচ্ছাকৃত ঘটনা নয়।

শনিবার নগরীর খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেটে পিয়াজের গুদাম ও পাইকারি বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে বস্তায়-বস্তায় পচা পিয়াজ দেখা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত খাতুনগঞ্জ সংলগ্ন চাক্তাই খালপাড় ও কর্ণফুলী নদীতে এবং পাড়ে ফেলা হয় কয়েক’শ পিয়াজের বস্তা। রাতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সেই পিয়াজ নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানার আরেফিননগরে আবর্জনার ভাগাড়ে ফেলে দেন। তারপরও নগরের কোথাও কোথাও ছড়িতেছে পচা পিয়াজের দুর্গন্ধ। 

নগরীর ৩৫ নম্বর বক্সিরহাট ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক আহমদ ছফা বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট, প্রধান রাস্তা, চাঁন মিয়া বাজার ও মধ্যম চাক্তাই এলাকায় পচা পিয়াজ পেয়েছি। চারটি ট্রাকে করে আমরা সেগুলো আরেফিননগরে ময়লার ভাগাড়ে ফেলেছি।’

হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে নৌকায় করে পিয়াজ আসছে। যেসব পিয়াজ নৌকার তলায় থাকে পানি লেগে সেগুলোয় দ্রুত পচন ধরে। গুদামে আসার পর সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। যেসব পচা পিয়াজ ফেলে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো মিয়ানমারের পিয়াজ।’

ক্যাবের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ‘প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথাযথ তদারকির অভাবে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা মজুতদারির সুযোগ নিয়েছে। মজুদের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি করে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। মজুদ করা যেসব পিয়াজ বিক্রি করতে পারেনি, পচে গেছে, সেগুলো এখন ভাগাড়ে ফেলা হচ্ছে।’


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর