১৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:৪০

চট্টগ্রামে জোড়া খুনের আসামিসহ গ্রেফতার ৫

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামে জোড়া খুনের আসামিসহ গ্রেফতার ৫

চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত রেলওয়ে সিআরবির জোড়া খুন মামলার অন্যতম পলাতক আসামি এবং কিশোর গ্যাং লিডার শেখ ফরিদ আহমেদ অবশেষে পুলিশের হাতেই ধরা পড়েছে। ফরিদ দীর্ঘদিন ধরেই পলাতক থেকে রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত চাদাঁবাজি, রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি, ইয়াবা ব্যবসা, অস্ত্র তৈরি, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে।

ফরিদ দীর্ঘদিন যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে রেলওয়েতে টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকর্ম করে আসছিল। ফরিদ জোড়া খুন মামলার অন্যতম আসামি সাইফুল আলম লিমন গ্রুপের অন্যতম সহযোগী।
 
শনিবার সেই ফরিদসহ ৫ সন্ত্রাসীকে মাদক সেবন অবস্থায় গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী পুলিশ।

রাণীর দীঘির পাড়ের ইসহাক ভিলার তৃতীয় তলার বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বাসা থেকে অস্ত্র তৈরি ও মেরামতের বিভিন্ন সরঞ্জাম, ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। ওই বাসা থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম, ব্যারেল, পিস্তল গ্রিফ উইথ ট্রেগার মেকানিজম এর ভাঙা অংশ, স্পিং, স্প্রিংবিহীন ম্যাগজিন, পিস্তলের গ্রিফ কভার, রেত পাথর, পিস্তলের বডি লগিং পিন, অস্ত্র মেরামতের ধাতব প্লেট, ১১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও দুইশ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতাকৃতরা হল-কোতোয়ালী থানার রাণীর দিঘীর উত্তর পাড়ের ইসহাক ভিলার মো. ইসহাকের ছেলে মো. ইয়াকুব, একই এলাকার এনায়েত বাজার আবদুল হাই সেক্রেটারী বাড়ির মৃত মো. রফিকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মামুন, ফেনী জেলার সদর উপজেলার মটুয়া গ্রামের কালা মিয়া মাস্টার বাড়ির মৃত শেখ আহম্মদের ছেলে শেখ ফরিদ আহম্মদ, বাঁশখালী উপজেলার জঙ্গল জলদী গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার নিহার রঞ্জন বাড়ির তুষার কান্তি বিশ্বাসের ছেলে শিমুল বিশ্বাস ও সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি মেসি পুকুর পাড় ২ নম্বর গলির করিম সওদাগর বাড়ির মৃত আজিজ মিয়ার ছেলে মো. আলাউদ্দিন।

যুবলীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ফরিদ যুবলীগের কেউ নন। যুবলীগকে বির্তকিত করতে এসব ব্যক্তিরা বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ফরিদের মতো আরও যারা এসব অপকর্ম করছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, শেখ ফরিদ রেলওয়ের টেন্ডারবাজি নিয়ে সংগঠিত সিআরবি ডাবল মার্ডার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সিআরবি এলাকায় ৩০-৪০ জনের একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে তার। তাদের মাধ্যমে পলোগ্রাউন্ড ও সিআরবি এলাকায় গড়ে উঠা দোকান ও পার্কিংয়ে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে। তার ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা করে ২০ মাদক মামলার আসামী মো. আলাউদ্দিন ও নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে মো. ইয়াকুব। এছাড়া তারা অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনা ও মেরামতের কাজও করে। মাদক সেবনের জন্য ইয়াকুবের বাসায় একত্রিত হয়েছিল তারা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাদকের আসর থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘শেখ ফরিদ রেলওয়ের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার। প্রতিটি টেন্ডারে রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে প্রভাব বিস্তার করেন তিনি। এছাড়া বাণিজ্যমেলা চলাকালে পলোগ্রাউন্ডের আশপাশে গড়ে উঠা দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদাবাজি করতেন তিনি। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তার ব্যবসা বন্ধ করে দিতেন। প্রতিবাদ করলে এলাকা ছাড়া করতেন। ভয়ে কেউ পুলিশের কাছে অভিযোগ পর্যন্ত করত না। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর