২২ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:০১

চট্টগ্রামে বাড়ছে ই-পাসপোর্টের চাহিদা

তিন মাসে ১২ হাজার আবেদন

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামে বাড়ছে ই-পাসপোর্টের চাহিদা

দিন দিন চট্টগ্রামে ই-পাসপোর্টের চাহিদা বাড়ছেই। রাজধানী ঢাকার পর চট্টগ্রামে এই ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম পুরোদমেই শুরু হয়েছে গত তিন মাস আগেই। এই তিন মাসে চট্টগ্রামের পৃথক দুটি অফিসে প্রায় ১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এতে ইস্যু হয়েছে প্রায় ৪ হাজারের উপরে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আবেদনকারিরা এসব আবেদন করছেন। বিশেষ করে অনলাইনে আবেদনের পাশাপাশি নিরাপত্তা, পৃষ্ঠা বেশী, ইমেগ্রেশন ঝামেলা কমসহ নানা সুবিধার কারণে এই ই-পাসপোর্টের আবেদনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে ভোগান্তিও কমছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনের করছেন।

এর আগে গত ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকব ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় কিছুদিন স্থগিত করে আবারও গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ই-পাসপোর্টের আবেদন বাড়তে শুরু করে।

পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের গত তিন মাসে (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর) মনসুরাবাদে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও পাচঁলাইশ অফিস মিলে প্রায় ১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এতে মনসুরাবাদে হবে প্রায় ৭ হাজার এবং পাচলাঁইশে হবে ৫ হাজার। এদের মধ্যে ই-পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছে পৃথকভাবে মনসুরাবাদে ৪ হাজার ও পাচঁলাইলে ৩ হাজার। সবমিলে চট্টগ্রামে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আবেদনকারিরা অনলাইনে আবেদনের পাশাপাশি বিশেষ নিরাপত্তাসহ নানাবিধবিষয়ে প্রতি দৃষ্টি দিয়েছেন গ্রাহকরা।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় আঞ্চলিক পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মো. আবু সাঈদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত তিন মাসে মনসুবাদে আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ৭ হাজারের উপরে। এতে ইস্যু হয়েছে প্রায় ৪ হাজারের মতো ই-পাসপোর্ট। করোনাকালীন সময়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ নানাবিধ হয়রানীমুলক বিভিন্ন ঝামেলা মুক্ত করতে নানা উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নানা কারণে ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসবে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক ই-পাসপোর্টসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড চলমান রয়েছে। তবে আরো কঠোর নজরদারির মধ্যে পাসপোর্টের কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া যায়, সেই বিষয়েও কাজ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। চান্দঁগাও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাসুম হাসানও।

মোহাম্মদ আনোয়ার নামের একজন ই-পাসপোর্টের আবেদনকারী বলেন, আগের এমআরপি পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন ই-পাসপোর্ট করতে আসলাম। এমনকি অনলাইনে পূরণ করার সময় বিকাশের মাধ্যমে ফিও পেমেন্ট করেছি। তিনি বলেন, দশ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য ৮ হাজার ৫০ টাকা জমা দিয়েছি। ১০ দিনে পাসপোর্ট পাবো বলেছে। আবেদন নেয়ার পর ছবি ও দশ আঙ্গুলের ছাপ নিয়েছে। চোখের মনির ছবিও তুলেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গ্রাহকদের ৫ ও ১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। পাসপোর্ট অফিসের আবেদন দাখিলের ক্ষেত্রে অনলাইনে (ভিসা কার্ড, কিউ-ক্যাশ, বিকাশ) পেমেন্টের পাশাপাশি ওয়ান ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ও ঢাকা ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া যাবে। 

ই-পাসপোর্টের ফি: ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট স্বাভাবিক সময়ে (সাধারণ) অর্থাৎ ২১ কার্যদিবসে পেতে হলে জমা দিতে হবে ৪ হাজার ২৫ টাকা। একই পাসপোর্ট এক্সপ্রেস ডেলিভারি অর্থাৎ ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা এবং ২ কর্মদিবসে পেতে হলে লাগবে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা। ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ২১ কর্ম দিবসে পেতে হলে লাগবে ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং দুই কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।

অন্যদিকে, ৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ২১ দিনে পেতে লাগবে ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা এবং দুই কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১২ হাজার ৭৫ টাকা। ১০ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ২১ কর্ম দিবসে পেতে লাগবে ৮ হাজার ৫০ টাকা, ১০ কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১০ হাজার ৩৫০টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারির মাধ্যমে মাত্র দুই কর্মদিবসে পেতে লাগবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশেই প্রথম ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। একইভাবে এ পাসপোর্ট চালুর ক্ষেত্রে বিশ্বে ১১৯তম দেশ। বর্তমানে ৬ মাসের বেশি মেয়াদ থাকা মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি পাসপোর্ট যাদের আছে তাদের  ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা নতুন করে আবেদনকারীদের দেওয়া হবে ই-পাসপোর্ট।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর