১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:১৮

চসিক নির্বাচন: মাঠে ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলর প্রার্থী, বাড়ছে উত্তেজনা-ক্ষোভও

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চসিক নির্বাচন: মাঠে ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলর প্রার্থী, বাড়ছে উত্তেজনা-ক্ষোভও

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীদের পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থীরাও ভোটের মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের চায়ের দোকান, উঠুন বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ নানাভাবে প্রচারণায় রয়েছেন নির্ঘুম রাত। হচ্ছেন প্রার্থীদের পাশাপাশি সমর্থকদের মুখোমুখিও।

ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডসহ বিদ্রোহী কাউন্সিলর রয়েছেন এমন প্রায় ৩৫টি ওয়ার্ডে বাড়ছে উত্তেজনা এবং নানা ধরণের ক্ষোভও। ছেড়া হচ্ছে প্রার্থীদের পোষ্টার, করছেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা কটূক্তি ও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও। আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সর্বশেষ অভিযোগ পড়েছে ১২টি। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. হাসানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত ৭ দিনে এ পর্যন্ত আচরণবিধিসহ ১৫টি বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে যেসব অভিযোগ দেয়া হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তও চলছে। বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশন থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট থানাকেও অবহিত করা হয়েছে। তবে পৃথকভাবে নির্বাচনী মাঠে আছেন ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট।

দলীয় ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সদ্য বিদায়ী কাউন্সিলর ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলি ওয়ার্ডের তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ২ নম্বর জালালাবাদে সাহেদ ইকবাল বাবু, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলিতে বিতর্কিত জহুরুল আলম জসীম, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলীতে মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে সাবের আহমেদ, ১৪ নম্বর লালখান বাজারে এফ কবির মানিক, ২৫ নম্বর রামপুরায় এসএম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদে এইচএম সোহেল, খুনের মামলায় সদ্য গ্রেফতারকৃত ২৮ নম্বর পাঠানটুলীতে আব্দুল কাদের, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তারেক সোলায়মান সেলিম (অসুস্থ), ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজারে হাসান মুরাদ বিপ্লব ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী। 

তাছাড়া সিটি নির্বাচনের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের ১২ জন বর্তমান কাউন্সিলরসহ ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রায় অর্ধ-শতাধিক বিদ্রোহী হিসেবে কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। তাছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডেই একের অধিক প্রার্থী হওয়ায় দলের কাউন্সিলর প্রার্থীদের টেনশনের পাশাপাশি উত্তেজনা শুরু হয়েছে সমর্থকদের মধ্যে। সর্বশেষ নির্বাচনকে ঘিরে ২৮ নং পাঠানটুলি ওয়ার্ডে সহিংস ঘটনায় আজগর আলী খুনের মামলায় প্রধান আসামী হিসেবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পাঠানটুলীর আব্দুল কাদেরসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে গত বুধবার প্রেরণ করেছেন আদালত। 

একইভাবে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই উত্তেজনা রয়েছে। নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের মধ্যে প্রথমে আলোচনায় আছে চান্দগাঁও ৪ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে আওয়ামী লীগের অন্তত সাতজন একই দলের প্রার্থী রয়েছেন। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে অনেকেই নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পূর্ব মাদারবাড়ি ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী চৌধুরী জহির উদ্দিন বাবর, ১৪ নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারীদের মধ্যে সম্প্রতি কয়েকদফা হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে।

সহিংসতা বা ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডের মধ্যে আরও রয়েছে ০৮নং শুলকবহর, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম, ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া, ২৫ নম্বর রামপুর, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদ, ২৮ নম্বর মোগলটুলী, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা, ৩৮ নম্বর গোসাইলডাঙাসহ আরও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর