আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমদ এমপি বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি কোনো অন্যায় কাজ করিনি। অন্যায় কোনো কাজেও আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবুও আমার কোনো অন্যায় হয়ে থাকলে এবং তা প্রমাণ করতে পারলে আমি যে কোনো ধরনের শাস্তি মাথা পেতে নিতে রাজি আছি। আমি এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ উপস্থাপনা কামনা করছি।
আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ও উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান প্রমুখ।
মোছলেম উদ্দীন আহমদ বলেন, মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করিনি। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাইয়ে দিতে আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে যে পোস্ট দেওয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ পোস্ট করলে তার দায় আমি নেব না। আমি মানুষ, রাজনীতি করতে গিয়ে চলার পথে ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। তবে এখন যে অভিযোগ উঠেছে, এ ধরনের কোনো অন্যায় কাজ করিনি। গণমাধ্যমে নিউজ দেখে হতাশ হয়েছি। আমাদের ভুল নেই, সেটা বলবো না।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়নের বিষয়টা দেখেন। আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা শুধুমাত্র তালিকা পাঠাই। তিনজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ৮ উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ে সভা করেছি। প্রত্যেক প্রার্থীর বক্তব্য নিয়েছি, শপথ করানো হয়েছে। মনোনয়ন না পেলেও দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে, আমাদের কাছে ভিডিও আছে। জেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পটিয়ার চারজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হলেও তাদের একজনকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমাদের মনোনয়ন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জামায়াত নেতা মুমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লাহ চৌধুরীর মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুমিনুল হকের ছেলে রুহুল্লাহর নাম আমরা পাঠাইনি। আমরা পাঁচজনের নাম পাঠিয়েছিলাম, কেন্দ্রে অনেকের নাম পাঠানো না হলেও সেখানে যুক্ত করেছে। কেন্দ্র থেকে যারা মনোনয়ন ফরম নিয়ে থাকে, তাদের নামও যুক্ত করা হয়ে থাকে অনেক সময়। জামায়াতের সঙ্গে রুহুল্লাহর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে দলীয় সভানেত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে সাতকানিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সিআরবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সিআরবিতে হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকার পক্ষের লোক, সরকার যেটা করে সেটা সমর্থন করা স্বাভাবিক। আবার কারও বিরোধিতা করার অধিকারও রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে গত সোমবার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামি মো. কামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আইন বিষয়ক সহ-সম্পাদক।
গত ৬ জানুয়ারি দুপুরে নিজের ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন লিখেন, ‘আসন্ন ১৭ নম্বর সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাইয়ে দিবে বলে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুসেইন কবির দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপির নাম দিয়ে আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার চেক নিয়েছেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাকে মনোনয়ন দেওয়া তো দূরে থাক, কেন্দ্রে নামটিও পাঠায়নি। এখন আমি আমার চেক ও টাকা ফেরত চাই। অন্যথায় বিষয়টি নিয়ে আমি তৃণমূলের আশা ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনার দ্বারস্থ হবো এবং ফৌজদারি মামলা করতে বাধ্য হবো।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর