চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ঊর্মিলা ভট্টাচার্য অসুস্থ হয়ে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পড়ে আছেন। ৭০ বছর বয়সী এই শিক্ষিকার পাশে নেই কোনো স্বজন। পেটে ব্যথা নিয়ে গত ২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ১৫ জানুয়ারি তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও কোনো স্বজন নিতে না আসায় এখনও তিনি হাসপাতালেই রয়েছেন।
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা জেরিন বলেন, ভর্তির পর থেকে কোনো স্বজন হাসপাতালে আসেনি। আমরা সরকারি সকল ওষুধসহ চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। ছাড়পত্র দেওয়ার পরও তিনি হাসপাতালের বেড ছাড়েননি। দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। বেড ছেড়ে কোথাও নিজে যেতে পারছেন না। আজকে অবস্থা একদম খারাপের দিকে গেছে, আমরা বিষয়টি ইউএনও স্যারকে বলেছি, সবাই অবগত আছেন।
চিরকুমারী ঊর্মিলা ভট্টাচার্য শিক্ষকতা করার সময় নগরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৮ বছর আগে অবসরে যাওয়ার পর পেয়েছেন পেনশনের এককালীন ৩০ লাখ টাকা। স্বামী-সন্তান কেউ না থাকায় পেনশনের টাকা ভাই-বোনের হাতে তুলে দেন তিনি। শেষ সময়ে আত্মীয়-স্বজন পাশে থাকবেন। কিন্তু প্রায় এক মাসের কাছাকাছি তিনি হাসপাতালে আছেন নিঃসঙ্গ। একদিকে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা অন্যদিকে নিঃসঙ্গতায় তার শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছে। কিন্তু স্বজনেরা কেউ দেখা না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঊর্মিলা পটিয়া উপজেলার ছনহরা মটপাড়া এলাকার বিশ্বেশ্বর ভট্টচার্যের মেয়ে।
অসুস্থ ঊর্মিলা ভট্টাচার্য জানান, আগ্রাবাদ শিশু নিকেতনে শিক্ষকতা করতেন। অবসরকালীন প্রায় ৩০ লাখ টাকা পেনশন পেয়েছেন যা তার ভাই-বোনদের দিয়েছেন। ওই টাকায় তারা পুকুর করেছেন, জমি কিনেছেন। কয়েকদিন আগে তার এক বোনের ছেলে হাসপাতালে এসে তাকে ২ হাজার টাকা দিয়ে চলে গেছেন। ভাই-বোনেরা খবর নিচ্ছে না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল