বরিশাল নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চকবাজারের বড় বড় এবং স্বনামখ্যাত দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও অখ্যাত ও ছোট ছোট দোকানের এক শাটার খুলে আবার কখনও দুই শাটার ফেলে ভেতরে চলছে ঈদের বেচাকেনা। কিছু দোকান বন্ধ থাকলেও কিছু দোকানের বেচাবিক্রি চলায় সামগ্রিকভাবে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না বরিশালে।
এদিকে, নগরীর সদর রোড, গীর্জা মহল্লা, বটতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় দোকান খোলা রাখা হলেও চকবাজার-লাইনরোড-কাঠপট্টি-পদ্মাবতি এলাকার দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ায় চাপে রয়েছেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার সকালেও বরিশাল নগরীর চকবাজার, গীর্জামহল্লা, বাজার রোড এবং কাঠপট্টি এলাকায় ঈদবাজার কেন্দ্রীক বিপুল সংখ্যক মানুষ দেখা গেছে। ব্যবসায়ী সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বড় বড় এবং ব্র্যান্ডের দোকানগুলো না খুললেও ছোট ছোট অনেক দোকান খোলা রাখা হয়েছে। গীর্জা মহল্লা এবং বটতলার সব তৈরি পোশাকের দোকান খোলা রাখা হয়েছে। তবে এসব দোকানে শারীরিক দূরত্ব রক্ষাসহ স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
নগরীর চকবাজারে কিছু দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে কর্মচারীরা সম্ভাব্য ক্রেতা দেখলেই শাটার খুলে তাদের ভেতরে ঢুকিয়ে আবার শাটার ফেলে চলে বেচাকেনা। এসব দোকানেও শারীরিক দূরত্ব রক্ষা, হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, ব্লিচিংযুক্ত পাপোস, জীবাণুনাশক স্প্রেসহ কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থাই দেখা যায়নি। সব দোকান না খুলতেই সকালের দিকে চকবাজারের রাস্তায় গা ঘেঁষে চলার অবস্থা হয় মানুষের। এছাড়াও সাংবাদিকের ক্যামেরা দেখলেই শাটার আটকে দেয় দোকানীরা।
ক্রেতারা জানান, নেহায়েত পরিবারের সদস্যদের চাপে পড়ে কিছু কেনাকাটা করতে মার্কেটে এসেছেন তারা। করোনার ভয় থাকলেও নিরূপায় তারা।
এদিকে, নগরীর চক বাজারের ব্যবসায়ী মো. মাছুম বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির সিদ্ধান্তে চকবাজার-কাঠপট্টি-পদ্মাবতীর দোকান বন্ধ থাকলেও অন্যান্য এলাকার দোকান খোলা। পাশেই গীর্জা মহল্লা এবং বটতলা এলাকায় শারীরিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করে দেদারছে বেচাকেনা চলছে। শুধু চকবাজার বন্ধ রাখলে তো করোনা সংক্রামন রোধ হবে না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, শ্রম অধিদপ্তর থেকে মাইকিং করে দোকান খোলা রাখতে বলা হয়েছে। এ কারণে তারা দোকান খুলেছেন।
এদিকে, বরিশালের চকবাজার-লাইনরোড-কাঠপট্টি-পদ্মাবতি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহিম বলেন, সিটি মেয়রের আহ্বানে সাড়া দিয়ে করোনা সংক্রমণ এড়াতে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ীর কারণে এই উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ চাপে আছেন। কেউ দোকান খোলা রাখলেও স্বাস্থ্য বিধি বাস্তবায়ন তদারক করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, দোকান খোলা রাখার নামে কেউ স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন