রাজশাহী শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে আবারও দুই শিশু রাতে নিখোঁজ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার গভীর রাতে ওই দুই শিশু নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে একজন চলে এলেও আরেকজন এখনও ফিরে আসেনি। এ নিয়ে হুলস্থুল সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ ধরনের ঘটনা এর আগেও কয়েকবার হয়েছে। কেন্দ্রের শিশুদের নির্যাতন, খাবারে অনিয়মসহ নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক শিশু চলে যাওয়া বা নানা কারণে নিখোঁজের পর শুধুমাত্র থানায় দায়সারা সাধারণ ডায়েরি করেই বসে থেকেছেন শিশু কেন্দ্রটির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে শিশু উদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা তারা নেননি। শুক্রবারের ঘটনাটি নিয়ে অন্যান্য শিশুদের অভিভাবকদের মাঝেও দেখা দিয়েছে চরম আতঙ্ক। একের পর এক এ ধরনের ঘটনা নিয়ে তাদের মাঝে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে।
নিখোঁজ দুই শিশু হলো রাসেল (৮) ও মাহফুজ (৮)। তাদের মধ্যে রাসেলকে রাজশাহী আমলি আদালত ২ এর মাধ্যমে ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেই থেকে রাসেল এখানেই অন্য শিশুদের সঙ্গে বসবাস করত। আর মাহফুজের চাচার বাড়ি রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়া এলাকায়। তবে রাসেলের পরিচয় এখনও জানে না কেউ। অনাথ হিসেবেই তাকে আদালত থেকে শিশু কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র সূত্র মতে, শুক্রবার রাতে রাসেল ও মাহফুজ নগরীর উপশহর-২ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত কেন্দ্রের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করা অবস্থায় নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে গতকাল শনিবার সকালে বিষয়টি টের পান কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অথচ শিশু কেন্দ্রে রাতে দায়িত্বরত থাকার কথা একজন নৈশপ্রহরী ও হাউজ কর্মকর্তা।
কেন্দ্রের উপপরিচালক নূরুল আলম প্রধান বলেন, দুটি শিশু নিখোঁজ হয়ে যায়। তবে তারা তাদের অভিভাবকদের বাসায় গেছে। শুক্রবার বিকালে তারা বেড়াতে গিয়েছিল মনে হয়। তাদের খুঁজতে লোক পাঠানো হয়। পরে রাসেল চলে এসেছে। আরও একজন চলে আসবে বলে শিশুটির অভিভাবকরা জানিয়েছে।
সূত্র মতে, এভাবে এই কেন্দ্র থেকে গত ৮ বছরে অন্তত ১০ জন শিশু নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজের পরে কয়েকটি জিডিও করা হয়েছে থানায়। কিন্তু তাদের উদ্ধারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে প্রায় দেড় হাজার শিশুকে ভর্তি করা হয় এখানে। যাদের বেশিরভাগরই এখনও কোনো কর্মসংস্থান জোটেনি বা সুরক্ষা পায়নি। অথচ এই কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটি চালাতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে অন্তত নয় কোটি টাকা।
বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন