ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ডিগ্রি প্রদান করায় পুলিশ বাহিনীর সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ‘ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ)’ ডিগ্রি স্থগিত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান এ সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বেনজীর আহমেদ ভর্তি ফরমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ফরমটি নীল কালি দিয়ে পূরণ করা হলেও শিক্ষাগত যোগ্যতার অংশটি লেখা হয়েছে কালো কালি দিয়ে। এমনকি তদন্ত কমিটির মতে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবিএ নিয়ম অনুযায়ী, কোনো আবেদনকারীকে অবশ্যই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর অর্জন করতে হয়। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, বেনজীর আহমেদ এই ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণ করেননি।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিগ্রি আপাতত স্থগিত থাকবে এবং একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালাবে। পাঁচ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আইন অনুষদের ডিন, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দিন আহম্মদ, যিনি কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
এ তদন্ত কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার আগ পর্যন্ত বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রি কার্যকর থাকবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে ডিবিএ ডিগ্রি গ্রহণের পর থেকে বেনজীর আহমেদ নিজেকে ‘ডক্টর’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। ডিগ্রি অর্জনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর বিষয়টি তদন্তে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।