বর্তমান নির্বাচন কমিশন ‘সামরিক উর্দি ও দলীয় পোশাকে আবৃত, মেরুদণ্ডহীন’ একটি সংস্থা বলে দাবি করেছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীর উদ্দীন পাটওয়ারী। ইসির বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতের’ অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আগে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে ‘বঞ্চিত করা হয়েছে’ বাংলাদেশের মানুষকে। এখন পাঁয়তারা চলছে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ‘বাধাগ্রস্ত করার’। গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসির সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধিদলের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে এনসিপি আবেদন জমা দেয় ২২ জুন। আবেদনের ত্রুটি সংশোধন করে জমা দেওয়ার শেষে দিনে গতকাল এনসিপি নির্বাচন কমিশনে যায়। এরই অংশ হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে এনসিপির প্রতিনিধিদল বৈঠক করে। এ সময় নাসীর উদ্দীনের সঙ্গে মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান ইসির বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ তুলে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক এ এম এম নাসীর উদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, দিনদিন এ ইলেকশন কমিশনকে দেখতে পাচ্ছি, ততই বুঝতে পারছি যে এটা মেরুদণ্ডহীন একটা ইলেকশন কমিশন। দিনদিন দেখতে পাচ্ছি ইসির অধিকাংশ অঙ্গজুড়ে সামরিক উর্দি পরা পোশাক এবং বাকি যতটুকু যারা আছে তারা দলীয় পোশাকে আবৃত। তিনি বলেন, আগে মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আমরা ভবিষ্যৎ যে বাংলাদেশের দিকে যাচ্ছি, সেখানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি দল ছাড়া অন্য কেউ ভোট দিতে এলে সেখানে ইসি সমস্যার সৃষ্ট করবে- এ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি। ইসি এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি : এক প্রশ্নের জবাবে নাসীর উদ্দীন বলেন, ইসি আগের আইনে গঠন ছিল। ইতোমধ্যে ইসি কিছু ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দিয়েছে, যা যেটা প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেও আসেনি। তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে এখনো সুযোগ দিচ্ছি; তাদের সে শুভবুদ্ধির উদয় হোক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আসুক; ভোট নেওয়ার প্রসেস থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেওয়ার জন্য সচেষ্ট হোক। তিনি আরও বলেন, সাংবিধানিক সংস্থার সার্বিক চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে। এর আগে ইসিকে সংশোধনেরও সুযোগ দিচ্ছি। সামনে এটার কোথায় কোথায় সমস্যা জনগণের সামনে আমরা উদঘাটন করব। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে ইলেকশন কমিশন যে একটা মেরুদণ্ডহীন সেটা আস্তে আস্তে প্রকাশ পাবে ইনশা আল্লাহ।
সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই আগামী নির্বাচন হবে : নাসীর উদ্দীন বলেন, দেশকে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে নির্বাচন কমিশনের যেসব কর্মচারী ভোট ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল আমরা তাদের পদত্যাগ চেয়েছিলাম কিন্তু এ পর্যন্ত হয়নি। এখন আমাদের যে জুলাই সনদ হবে সেখানে এই নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া এসেছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আগামী নির্বাচন হবে।