গাজীপুরে বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে এক ব্যবসায়ীকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে। ক্লুলেস এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটন করেছে বাসন থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বন্ধু চাচাতো ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ওসি মালেক খসরু খান এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন স্বপন মিয়া ওরফে আসলাম (৩১)। তিনি জামালপুর সদর উপজেলার চর মল্লিকপুর এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। নিহত মো. রনি বাবু (২২) একই উপজেলার পাশর্^বর্তী গ্রাম মল্লিকপুর এলাকার মোতাহার হোসেনের ছেলে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ওসি মালেক খসরু খান জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাসন থানাধীন মোগরখাল এলাকায় পৃথক বাসা ভাড়া নিয়ে সপরিবারে থাকতেন দুই বন্ধু ও সম্পর্কীয় চাচাতো ভাই আসলাম ও বাবু।

তারা দুজনই বিভিন্ন পোশাক কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টে ব্যবসা করতেন। গত শুক্রবার দুপুরে রনি বাবুর গলা কাটা লাশ তার গাজীপুরের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিন রনির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়। ক্লুলেস খুনের এ ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। নানা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ রবিবার বিকালে ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকা থেকে নিহতের বন্ধু আসলামকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে রনিকে খুন করার কথা স্বীকার করে আসলাম জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধারের আগের দিন রনিকে খুন করা হয়। গ্রেফতার আসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উন্মোচন করে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওসি মালেক খসরু খান জানান, বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তার সম্পর্কের সূত্র ধরে রনির সঙ্গে আসলামের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এ পরকীয়ার সম্পর্ক চলে আসছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে আসলাম ক্ষুব্ধ হয়। রনিকে একাধিকবার নিবৃত্ত করতে চাইলেও আসলামের স্ত্রীর সঙ্গে রনি পরকীয়া সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। এর জেরে রনিকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসলাম গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ১০টি ট্যাবলেট মিশিয়ে রনিকে খাওয়ায়। এতে রনি অচেতন হয়ে পড়লে ধারালো ‘কাটার’ (কাগজ কাটার চাকু) দিয়ে গলা কেটে তাকে খুন করে আসলাম। পরে দরজা বন্ধ করে ঘটনাস্থল থেকে সে পালিয়ে যায় বলে গ্রেফতার আসলাম জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। খুনের ঘটনার পরদিন শুক্রবার দুপুরে বাড়ির ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন ভাড়া নেওয়ার জন্য রনির কক্ষের সামনে গিয়ে দরজা খোলা দেখতে পায়। এ সময় তিনি ঘরে ঢুকে রনির গলা কাটা লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।