কয়েক দিনের টানা তাপপ্রবাহের কারণে নওগাঁর মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ডায়রিয়া ও গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পাঁচ দিনে অন্তত ২৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৮৫ জন। প্রচণ্ড গরমের কারণে পানিশূন্যতা, পেটব্যথা, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে চিকিৎসা নিয়েছেন আরও ১৫০ জন। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে বৃহস্পতিবার ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৬৭ জন। বেডের অভাবে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদ থাকলেও আবাসিক কর্মকর্তাসহ রয়েছেন মাত্র চারজন। জনবলসহ নানা সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।
বুধবার সন্ধ্যায় পিরপালি বাজার থেকে পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন কুরসিয়া বিবি (৬০)। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাকে বারান্দায় রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, ফ্যান নেই। গরমে আর পেটব্যথায় একেবারে নাকাল অবস্থা। একটু ভালো জায়গা আর চিকিৎসার ঠিকঠাক ব্যবস্থা চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগীর স্বজনের দাবি, পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ, দ্রুত হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো, বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করে দিয়ে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা তাসনিম হুসাইন আরিফ বলেন, কোরবানি ঈদের দিন থেকে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। জনবল সংকটে আমরা চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মাত্র চারজন চিকিৎসক নিয়ে ৫০ শয্যার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ ও আবাসিক চিকিৎসাসেবা চালিয়ে নিতে হচ্ছে। হঠাৎ রোগীর চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় বেড সংকুলান সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। রোগীর চাপ এ রকম অব্যাহত থাকলে আমাদের আরও সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তিনি আরও বলেন, এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৪ জন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পদ থাকলেও আবাসিক কর্মকর্তাসহ রয়েছেন মাত্র চারজন। এর মধ্যে তিনজন চিকিৎসক দিয়ে পর্যায়ক্রমে জরুরি ও অন্তর্বিভাগের কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটে ছোট ছোট সমস্যায়ও রোগীদের রেফার্ড করা হচ্ছে নওগাঁ কিংবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে আয়া, ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংকট রয়েছে। আয়া ও ওয়ার্ডবয়সহ পাঁচ পদের বিপরীতে রয়েছেন দুজন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর পাঁচ পদের জায়গায় আছেন মাত্র একজন।