প্রায় ৯ বছর পর হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে ফিরে পেল মা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে বিথি আক্তার (৩০) নামে ওই মেয়েকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেছে ত্রিপুরাস্থ ভারতীয় সহকারী কমিশনের কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন পর মেয়েকে ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মাসহ তার স্বজনরা। এসময় নো ম্যান্স ল্যান্ডে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। বিথি আক্তার নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার বাচুরি গ্রামের হেমায়েত থান্দারের মেয়ে। সে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। ২০১০ সালে সে হারিয়ে যায়।
বিথি আক্তারের মা সাফিয়া বেগম জানান, ২০১০ সালে বিথিকে নিয়ে ঢাকার গাজিপুরে বড় মেয়ের বাসায় বেড়াতে যান। তখন সেখান থেকে হারিয়ে যায় সে। এরপর বহু খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান পাওয়া যায় না। ২০১৭ সালে পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমার মেয়ে ভারতে আছে। পরে আমাদের এলাকার এক সাংবাদিক ত্রিপুরায় গিয়ে আমার মেয়ের সন্ধান পায়। আজকে মেয়েকে ফিরে পেয়েছি। মেয়েকে পেয়ে খুব খুশি লাগছে। তিনি বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের সরকারের নিকট কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করেন।
ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার কিরিটি চাকমা বলেন, ২০১২ সালে ত্রিপুরা রাজ্যের ধলায় জেলার পুলিশ বিথি আক্তারের সন্ধান পায় এবং আদালতে হাজির করে। সে মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় ওই বছরের ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশে তাকে ত্রিপুরায় মডার্ন সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে হস্তান্তর করে। সেখানেই সে চিকিৎসাধীন ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে বাংলাদেশ সরকারকে জানাই। ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও পুলিশকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা এই উদ্যোগ না নিলে বীথির কি হতো সেটি আমরা জানি না। মডার্ন মানসিক হাসপাতালে আরও কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাদেরকে দেশে ফেরাতে আমরা উদ্যোগ নেব।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কবির, ত্রিপুরায় নিযুক্ত সহকারী হাইকশিনের ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. জাকির হোসেন, দ্বিতীয় সচিব এস.এম আসাদুজ্জামান, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের নড়াইল জেলা সভাপতি সৈয়দ খাইরুল আলম, আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রসুল আহমেদ নিজামী প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক