কুষ্টিয়ায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় চাঞ্চল্যকর দুই ভাই হত্যা মামলায় ৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ জনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার সকালে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মোঃ মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষনা করেন।
দণ্ডিতদের মধ্যে ৩ আসামি পলাতক। বাকি আসামিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপিস্থত ছিলেন। আদালত সুত্র জানিয়েছে, ফকিরাবাদ গ্রামের আশরাফুজ্জামান রতনের ৭ম শ্রেণী পড়ুয়া মেয়েকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো এলাকার বখাটে আরিফুল ইসলাম আরিফ। মেয়েটি দামুকদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। বিষয়টি নিয়ে আরিফুলকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ করে মেয়েটির দাদা মুজিবর রহমান। এতে আরিফসহ তার বন্ধুরা ক্ষিপ্ত হয়।
২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজ শেষ করে মুজিবর রহমানসহ তার ভাই ও ছেলেরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে আসামি নয়ন শেখ, কমল হোসেন মালিথা, আরিফ, কামারুল মালিথা, সুমন মালিথা, নজরুল ইসলাম, রহিম শেখ ওরফে লালিম শেখ, মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, সিহাব, আশরাফ, সম্রাটসহ আর০ ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে।
এ সময় আসামিরা মুজিবর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিক্ষক মুজিবর রহমান। তার ভাই মিজানুর রহমানকে গুরুতর আহতবস্থায় প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী প্রেরণ করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনার পর মুজিবর রহমানের ছেলে জাকারুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলা করেন ভেড়ামারায় থানায়। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে আসামিদের অভিযুক্ত করে চার্জশীট দেয়। দীর্ঘদিন শুনানি শেষে আজ রবিবার রায় প্রদান করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী।
রায়ে বিচারক ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নরুল ইসলামের ছেলে আসামি কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামানিকের দুই ছেলে কামরুল প্রামানিক ও সুমন প্রামানিক একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সাথে প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ