৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৮:০৩

অবৈধ ভবন নির্মাণের অনুমতি, সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়রকে শোকজ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

অবৈধ ভবন নির্মাণের অনুমতি, সিরাজগঞ্জ পৌর মেয়রকে শোকজ

সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মাসুমপুর দক্ষিণপাড়া মহল্লায় অবৈধ ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে পুনরায় অনুমতি দেয়ায় পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা সিরাজীকে কারণ দর্শানো পূর্বক স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব স্বাক্ষরিত একপত্রে তাকে এ নির্দেশনা প্রদান করেন। 

জানা যায়, মাসুমপুর মহল্লার লুৎফর রহমান চারতলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিন্তু বিল্ডিং নির্মাণের কারণে পাশ্ববর্তী বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের নানা সমস্যা দেখা দেয়া দেয়। এতে তিনি পৌর কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে অভিযোগের পাশাপাশি আদালতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা দায়ের করেন। আদালত পর্যালোচনা করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। 

অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে তদন্তপূর্বক পৌর মেয়রকে ভবনটির নকশা বাতিলপূর্বক ভবনটি অপসারণের জন্য মেয়রকে নির্দেশ দেন। পরে পৌর কর্তৃপক্ষ ২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নকশাটি বাতিল করে অননুমোদিত ভবন অপসারণের জন্য একাধিকবার পত্র দেন। তারপরও লুৎফর রহমান আদালতের নিষেধাজ্ঞাসহ পৌর কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে কাজ করতে থাকেন। এ অবস্থায় বর্তমান মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা সিরাজী নিজ ক্ষমতাবলে ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি এক নোটিশের মাধ্যমে লুৎফর রহমানের ১৩২৮ নম্বর প্ল্যানটি সচল করে ভবন নির্মাণের নির্দেশ দেন। ওই প্ল্যানে কাজ করায় আমিনুলের বসতবাড়ির ভেতরে কলামের বেজ নির্মাণ করায় তার বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। 

এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত আমিনুল পুনরায় ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব পৌর মেয়রকে কেন এবং কোন ক্ষমতাবলে বাতিলকৃত প্ল্যানটি সচল করা হলো এর সুস্পষ্ট ব্যাখা প্রদানের জন্য নোটিশ প্রদান করেন। 

নোটিশে উল্লেখ করা হয়-পরিপত্র অনুযায়ী একটি কারিগরি কমিটি কেবল ভবন নির্মাণের বিষয়ে সুপারিশ/অনুমোদন প্রদান করতে পারেন। একজন মেয়র কোনোক্রমে অনুমতি দিতে পারেন না। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আমিনুল ইসলাম জানান, ভবনটি এমনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে যে, ভবনের কলামের বেজ আমার জায়গার মধ্যে ঢুকে গিয়ে ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। অবৈধ ভবনটির ছাদের প্যারাভিউটল ভেঙে গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, ভবনটি নির্মাণ না করার জন্য আদালতেরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং মামলাও চলমান রয়েছে। তারপরও লুৎফর রহমান আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবন নির্মাণ করছে। পৌর মেয়র কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই বাতিলকৃত নকশাটি পুনরায় কিভাবে সচল করল তা আমাদের বোধগম্য নয়। সচলকৃত নকশায় বিল্ডিং নির্মাণ করা হলে আমাদের বসতভিটা ক্ষতিসহ প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। 

এ বিষয়ে পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা সিরাজী জানান, প্রায় ১০ বছর যাবত দুই পরিবারের মধ্যে ঝামেলা চলছে। বিভিন্ন দপ্তর থেকে চিঠি চালাচালি হয়েছে। সর্বশেষ নকশা সচলের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে যে পত্র দেয়া হয়েছে তার সঠিক ব্যাখ্যা আমি প্রদান করেছি। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর