করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুপার সাইক্লোন আম্ফান ধেয়ে আসছে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে। তাই পটুয়াখালীর উপকূলের মানুষের মাঝে নতুন করে দুর্যোগের আতংক দেখা দিয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির মোকাবেলা আর উপকূলের মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে নিরাপদে রাখতে আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোতে নেয়া শুরু হয়েছে। জেলার অনেকস্থানে গোমট আবহাওয়া বিরাজ করলেও কোথাও কোথাও সূর্য উকি দিচ্ছে। নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। পটুয়াখালীর উপকূলে অবস্থানরত সকল মাছধরা ট্রলারসহ নৌযানকে নিরাপদে আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি বৈঠক করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাহাবুবুর রহমান জানান, বেড়িবাঁধ সংলগ্ন দুর্গত এলাকার মানুষসহ সকলের জন্য জেলায় সাইক্লোন শেল্টারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে মোট ৭৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার জন্য সকলকে নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারে ২ হাজার ২১৩ জন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে দুর্গতদের জন্য ২শ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৩ লক্ষ টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ২ লক্ষ টাকা, গোরুর খাদ্য ক্রয়ের জন্য ২ লক্ষ টাকা ও শুকনা ৩ হাজার প্যাকেট খাবার মজুদ রাখা হয়েছে।
এদিকে সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থানে ও দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সচেতন করতে সিপিপি’র উদ্যোগে মাইকিং করে জন সাধারণকে সামাজিক দূরত্ব মেনে নিজ নিজ স্থানে নিরাপদে থাকতে বলা হচ্ছে। এছাড়াও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে লাল পতাকা উড়িয়ে বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারেও লাল পতাকা উড়িয়ে বিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।
এক দিকে করোনা আতংক অপর দিকে সকাল থেকে আকাশ মেঘলা হওয়ায় ক্রমেই আতঙ্ক বাড়ছে গোটা উপকূলীয় এলাকার মানুষের মাঝে।
মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে সজাগ থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রায় ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সদস্য প্রস্তুত রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ