বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের মোনারপটল খেয়াঘাটে বাঙালি নদীর উপর স্বাধীনতার ৪৯ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। ফলে মাত্র ৫ মিনিটের নদী পথ অতিক্রম করতে ৮ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হয় পথচারীদের।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সদর হতে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত মোনারপটল খেয়াঘাট। ওই খেয়াঘাটের পশ্চিমে হলিদাবগা আর পূর্বে মোনারপটল গ্রাম অবস্থিত। নদীর উভয়প্রান্ত জনবসতিপূর্ণ।
নদীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ১৩টি গ্রাম আর নদীর পূর্ব পাড়ে রয়েছে ১৮টি গ্রাম। ৩১টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখের অধিক মানুষ প্রতিনিয়ত ওই খেয়াঘাট দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। কিন্তু সেখানে ব্রিজ না থাকায় বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে ৮ কিলোমিটার পথ ঘুরে ঘুরে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয়।
এছাড়াও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, শ্রমজীবী মানুষ, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবি ও নানা শ্রেণির পেশার মানুষ তাদের কর্মস্থলে যাতায়াতে ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে। মাত্র ৫ মিনিটের নদীপথ অতিক্রম করতে কখনো কখনো ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেয়াঘাটের মাঝির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার কখনো কখনো নৌকা ডুবিতে গরু-ছাগল ও মানুষের প্রাণ হারাতে হয়েছে ওই খেয়াঘাটে।
স্থানীয় লোকজন জানান, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৯ বছরে ওই খেয়াঘাটে পারাপার হতে গিয়ে নারী ও শিশুসহ প্রায় সাতজনকে প্রাণ হারাতে হয়েছে। খেয়াঘাট দিয়ে সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও সাঘাটা উপজেলার লোকজন যাতায়াত করেন। কৃষি প্রধান অঞ্চলের প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ সরাসরি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।
এই এলাকার ধান, আলু, সরিষা, ভুট্টা, কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, পাট, বিভিন্ন প্রকার সবজি, গোলাপ ফুল, রজনীগন্ধা ফুলও চাষ বেড়েছে। এইসব চাষিদের উৎপাদিত পণ্য হাটে নিতে হয় ৮ কিলোমিটার ঘুরে। আবার অনেক সময় রাতে রোগী পরিবহনের ক্ষেত্রে ৩১ গ্রামের মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়।
খেয়াঘাটের উভয় পাশে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সময় ধরে পারাপারের ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেঁটে নদী পরাপার করতে হয় বালুর মধ্যে দিয়ে। শীতকালে পানি কমে গেলে না চলে নৌকা না চলে পা। এ নিয়ে দুই পাড়ের মানুষের রয়েছে দারুন দুর্ভোগ।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউপি চেয়ারম্যান রোস্তম আলী মণ্ডল জানান, এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাট। এই খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে পথচারীদের দীর্ঘদিনের নদী পারাপারের কষ্ট লাঘব হবে। পাশাপাশি ৫ থেকে ৭ মিনিটের নৌ পথ অতিক্রম করতে কখনো কখনো পথচারীদের ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়।
মোনারপটল খেয়াঘাটে বিজ্র নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান ও সরকারের কাছে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই