সিরাজগঞ্জে আইনজীবী এবং আদালত কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট অপ্রীতিকর ঘটনার কারণে গত পাঁচদিন যাবৎ সিরাজগঞ্জ আদালতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আদালত খোলা থাকলেও আইনজীবীরা কর্ম থেকে বিরত থাকায় আদালতের নিয়মিত সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে জেল হাজতে থাকা আসামি, স্বজন ও বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণ এবং অভিযুক্ত কর্মচারীদের শাস্তির দাবিতে মিছিল-সমাবেশ করেছেন আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার সকালে আদালত প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর একই দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা এবং আইনজীবী সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ পান্না জানান, গত বৃহস্পতিবার আদালত পাড়ায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী এবং আইনজীবী আবুল কালামের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হয়। গত রবিবার জেলা জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মচারীরা আপত্তিকর ব্যানার নিয়ে আইনজীবীদের শাস্তির দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে সভা-সমাবেশ করেন। এরপর অফিস ও এজলাস বন্ধ রেখে আপত্তিকর ব্যানার নিয়ে আন্দোলন করার অভিযোগ এনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আদালত বর্জন শুরু করেন আইনজীবীরা।
এমন অবস্থায় মারধরের অভিযোগ এনে থানায় আইনজীবী ও স্টোনোগ্রাফারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। আইনজীবী ও স্টোনোগ্রাফারের মধ্যে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানকল্পে জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়। কিন্তু ঘটনার ৮দিন অতিবাহিত হলেও বিষয়টি সমাধানকল্পে তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। উল্টো অভিযুক্ত স্টোনোগ্রাফার ইউসুফ আলী পলাতক থেকেও আইনজীবীদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। আর তার পক্ষ অবলম্বন করে আদালতের কর্মচারীরা এজলাস ও অফিস কক্ষ বন্ধ রেখে আপত্তিকর ব্যানার হাতে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মিছিল-সমাবেশ করেছেন বলেও জানান তিনি।
কিন্তু জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। এ কারণে জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অন্যত্র বদলি, আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, স্টোনোগ্রাফার ইউসুফ আলীকে গ্রেফতার ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের অপসারণ দাবি করেন তিনি। অন্যথায় আদালত বর্জন অব্যাহত থাকবে, মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র আইনজীবীরা আদালতে দাখিল করবে না এবং আইনজীবীর সহকারীরাও আদালতে যাওয়া থেকে বিরত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী সমিতির সভাপতি মীর রুহুল আমিন বাবুসহ অন্যান্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই