কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু মানে উৎসব, আনন্দ আর উল্লাস। বুধবার চৈত্রের শেষ দিনে আনন্দ র্যালি, ফুল ভাসানো ও নাচের তালে তালে মেতেছে এ পাহাড়ের ত্রিপুরা পল্লীর তরুণ-তরুণীরা। নিজেদের সাজিয়েছে ঐতিহ্যবাহী পোশাকে। পাহাড়ি ত্রিপুরা পল্লীর ঘরে ঘরে এখন বইছে খুশির জোয়ার।
জানা গেছে, প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিনে বর্ষবরণের এ উৎসবে মেতে উঠে তারা। উৎসবমুখর হয়ে ওঠে লালমাই পাহাড়। সম্প্রীতির মিলনমেলায় মিশে যায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালিরা।
বুধবার কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের ত্রিপুরা পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে ঘরে রান্না হয় পাঁচন (হরেক রকম সবজির সংমিশ্রণ), লুচি মিষ্টান্নসহ নানান রকমের মিষ্টিজাতীয় খাবার। এর আগে সকাল ১০টার দিকে ত্রিপুরা পল্লী থেকে তরুণ-তরুণীরা দল বেঁধে র্যালি নিয়ে আসে কুমিল্লার কোটবাড়ির বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) পুকুরে। সেখানে তারা ফুল ভাসিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে সম্পন্ন করেন গঙ্গা পূজা। তাদের র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ ঘোষ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু।
সালমানপুর ত্রিপুরা উপজাতি কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি সজীব চন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, আমরা প্রত্যেক বছর চৈত্রের শেষ দিনে এই উৎসব করি। এবারেও করেছি। আমরা এখন গঙ্গা পূজার পরে আমাদের পল্লীতে বৃদ্ধস্নান অনুষ্ঠানের আয়োজন করি, তারপর আয়োজন করি অতিথি আপ্যায়নের। এরপর সারাদিন চলে আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিকেলে ঘরে ঘরে সবাই নারায়ণ পূজা করে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কোন পুকুর নেই। তাই দুই কিলোমিটার দূরে বার্ডের পুকুরে পূজা দিতে হয়।
সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ ঘোষ বলেন, ত্রিপুরা পল্লীতে এসে খুবই ভালো লাগছে। পাহাড়িদের এসব অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রেখেছে। তাদের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে বৈসু অন্যতম। অতীতের মতো উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, তাদের একটি পুকুর হলে ভালো হয়। এ বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ