যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেও মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। বর্তমানে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমলেও এখনো প্রায় ২৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। পানি নামায় বিধ্বস্ত বসতবাড়ী দেখে হাপিতেশ করছে বন্যাকবলিতরা। ঘরের নিম্নাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংস্কার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে ক্ষতিগ্রস্তরা। পানি কমায় ক্ষেতের নস্ট হওয়ায় ফসল দেখে চোখমুখে দুশ্চিন্তায় ছাপ পড়েছে কৃষকদের।
সরকারি হিসেব মতে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁত কারখানায় তলিয়ে যাওয়ায় সুতাসহ তাঁতের উপকরন নষ্ট হওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে তাঁতীরা। কাজ না থাকায় শ্রমিকরা বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকারিভাবে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনীয় তুলনায় অপ্রতুল।
এছাড়াও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়ায় কোরবানীর আগে গবাদিপশুকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দিতে না পারায় গবাদি পশু শুকিয়ে যাওয়া কৃষকরা ক্ষতির আশঙ্কা করছে। বন্যা কবলিতদের বর্তমানে কাজকর্ম না থাকায় খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছ। শিশু খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে পানি কমতে থাকায় শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালীতে নদীতীরে ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ফসলি জমিসহ বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে বন্যা কবলিতরা চরম দুর্বিসহ অবস্থায় জীবনযাপন করছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যা কবলিত ৫টি উপজেলায় ইতোমধ্যে ১৪০ মে. টন চাউল, শিশু ও গো-খাদ্যের জন্য ২০ লক্ষ নগদ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, যমুনার পানি যেভাবে বাড়ছিল তেমনি দ্রুত কমছে। তবে এবছর বন্যায় নদী তীর রক্ষা বাঁধের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যমুনার অরক্ষিত অংশের যে পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছিল সেসব পয়েন্টে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ