১৯ আগস্ট, ২০২০ ১১:৩২

বগুড়ায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়া

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

বগুড়ায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কুয়া

বালতি বা কলসের গলায় দড়ি বেঁধে কুয়ার মধ্যে ফেলে দিয়ে টেনে টেন পানি তুলতে হতো। সেই পানি খাবার, রান্নাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হতো। কুয়া থেকে পানি তোলা কষ্টসাধ্য ছিল বলে অনেকেই নদী ও বিলের পানি ব্যবহার করতো। কিন্তু কুয়ার ব্যবহার এখন নেই বললেই চলে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুয়ার ব্যবহার প্রচুর থাকলেও এখন তা হারিয়ে যেতে বসেছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে এই কুয়াগুলোর ব্যবহার কমতে কমতে এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। স্থানীয়রা বলছেন, কালের বিবর্তনে কুয়াগুলো হারিয়ে যাচ্ছে।

ব্রিটিশ শাসনামলের পর বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ১৭৯ গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক এন্দেরা (কুয়া) স্থাপন করা হয়। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই এন্দেরা (কুয়া) গুলো। ব্রিটিশ শাসনামলের পর ওই এলাকার মানুষ খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুরের পানি রান্না ও খাবারের কাজে ব্যবহার করতো। এরপর মানুষ সচেতন ও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগার পূর্বেই তারা তাদের বসতবাড়ির আঙিনায় কিংবা সড়কের পাশে এন্দেরা (কুয়া) স্থাপন করে নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুরের পানি পরিহার করে। এরপর আধুনিক যুগের ছোঁয়া লাগায় বর্তমানে প্রতিটি গ্রাম, পাড়া, মহল্লা কিংবা বাড়িতে বাড়িতে সরকারী সহায়তার পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপন করে টিউবওয়েল। ফলে ওই এলাকার মানুষ ক্রমান্বয়ে বিশুদ্ধ পানি পান করা শুরু করে। ফলে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন যাবত পানিবাহিত রোগ কলেরা, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ পেটের জটিল ও কঠিন রোগ থেকে রক্ষা পায়।

বর্তমানে ওই উপজেলায় এখনও প্রায় দেড় শতাধিক এন্দেরা (কুয়া) থাকলেও সেগুলোর বেশিরভাগ ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখন আর মানুষ এন্দেরা (কুয়া’র) পানি ব্যবহার করতে চায় না।

এ ব্যাপারে হলিদাবগা গ্রামের মো. মতিয়ার রহমান ও এমদাদুল হক মাষ্টার জানান, তাদের বাড়িতে ব্রিটিশ আমলের এন্দেরা (কুয়া) স্থাপন করা হয়েছিল। ২০০০ সাল থেকে ওই কুয়ার পানি আর পান করা হয় না। কুয়াটি সংস্কার করা হলে পানি পান করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের লিভার ও পরিপাক তন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোকছেদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এক সময় সমাজের মানুষ অসচেতন ছিল। ছিল না তাদের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ। তাই তারা নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুরের পানি পান করতো। আর এতে করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি পেটের পীড়ায় ভুগতো। এখন টিউবওয়েল বা মিনারেল পানি ব্যবহারের ফলে পেটের সমস্যাও কমে গেছে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর