অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা সবাই যার যার শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে সব অশুভ শক্তি পরাজিত করতে পারব। নিজেরা বিভক্ত হয়ে গেলে, ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হয়ে যাব। আমরা ব্যর্থ হতে চাই না।’ গতকাল ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ড. ইউনূস বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীবদ্ধ হয়ে ধর্ম পালন করাটা হাস্যকর। এটা কোন ধরনের দেশ আমরা বানালাম? এ রকম দেশ বানানোর জন্যই এত রক্তপাত, এত কিছু হলো? আমরা এটা চাই না। আমরা সম্পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে, সম্পূর্ণ বিশ্বাসের মধ্যে আমাদের যার যার মত, যার যার ধর্ম পালন করতে চাই। আমরা নতুন বাংলাদেশের কথা বলছি। সেটা নিশ্চিত করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা ২৪-এর জুলাইয়ে যে অসাধ্য সাধন করেছে, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। এখানে সব নাগরিক সমান সুযোগ পাবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা সে যে ঘরেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, সে ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, সবাই নাগরিকের সমান সুবিধা পাবে। আমরা তাদের সেই সুযোগ দিতে চাই। তারা নিজের মতো করে গড়ে উঠবে। দেশ গড়ে তুলবে। আমরা এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই, পৃথিবী আমাদের অনুসরণ করবে। জুলাই গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বৈষম্য-দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার যে অগ্রযাত্রা শুরু করেছি, তার সব বাস্তবায়ন করতে হলে ধর্মবর্ণ ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সব অশুভ, অন্যায়, অন্ধকার পরাজিত করে ঐক্য ও সম্প্রীতির জয় হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে কল্যাণ ও সমৃদ্ধির পথে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা পুরো জাতি একটা পরিবার। পরিবারের মধ্যে নানান মতভেদ থাকবে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু পরিবার একটা অটুট জিনিস। এটা কেউ ভাঙতে পারে না। আমরা যেন জাতি হিসেবে অটুট একটা পরিবার হিসেবে দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক রাষ্ট্র আমাদের প্রতি কোনো পার্থক্য করতে পারবে না। নাগরিকের সমস্ত অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে। তাকে সেই অধিকার থেকে ক্ষুদ্র পরিমাণে বঞ্চিত করার অধিকার কোনো সরকারের নেই। কাজেই আমাদের ওই জায়গায় সোচ্চার হতে হবে।’