মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্টে সায় দিল দ্বিধাবিভক্ত মার্কিন সংসদ। এর পরের পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করে দেখা হবে। ডেমোক্র্যাটরা একযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গেলও রিপাবলকানরা এর বিরোধিতা করেছে। এক সপ্তাহ ধরে ইমপিচমেন্টের বিরোধিতা করেও অবশ্য শেষরক্ষা করতে পারেনি রিপাবলিকানরা। ২৩২-১৯৬ ভোটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছে মার্কিন সংসদ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ক্ষমতা অপব্যবহার করে অন্য রাষ্ট্রের নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে নজরদারি চালিয়েছেন।
ভোটাভুটির আগে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ইমপিচমেন্ট পদ্ধতি মোটেই সুখদায়ক স্বস্তির ব্যাপার নয়, বরং ঠিক তার উল্টো। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছি না, রিপাবলিকানরা কেন সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছেন।” কক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “মার্কিন নাগরিকরা যে সত্য জানতে পারবেন, এই বিষয়টিকে প্রত্যেক সদস্যের সমর্থন করা উচিত। সেই জন্যই ভোটাভুটি হচ্ছে। আর এর ফলে আমাদের গণতন্ত্র এখন সঙ্কটাপন্ন।”
হোয়াইট হাউস অবশ্য ইমপিচমেন্টের জন্য ডেমোক্র্যাটদের তীব্র নিন্দা করেছে। প্রেসসচিব স্তেফানি গ্রিশাম বলেছেন, “মিথ্যা ইমপিচমেন্ট আনতে চেয়ে সময় নষ্ট করছেন ডেমোক্র্যাটরা, তীব্র বিভাজন আসলে প্রেসিডেন্ট পদটারই অবমাননা করছে।” ট্রাম্পও বলেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় উইচ হান্ট ছাড়া আর কিছু নয়।”
রিপাবলিকানরাও গলা মিলিয়েছেন হোয়াইট হাউসের সঙ্গে। তাদের কথায়, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ট্রাম্পকে সরানোর চেষ্টা ছাড়া এটা অন্য কিছু নয়। ভোটাভুটির আগে সংখ্যালঘু নেতা কেভিন ম্যাককার্থি বলেন, “ব্যালট পেপারে হারাতে পারবে না বুঝেই প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করতে চায় ডেমোক্র্যাটরা।” একে তিনি গণতন্ত্র ধ্বংস করার প্রক্রিয়া বলেও ব্যাখ্যা করেন।
বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমার বিপরীতে থাকা আমার সব সহকর্মীর উদ্দেশে বলছি: জনগণকে ক্ষমতায় আসতে দিন। স্বাধীন দুনিয়া থেকে ওংদের পরবর্তী নেতা খুঁজে নিতে দিন। আমাদের সংবধানের নীতি মেনে চলুন। ওয়াশিংটনে বসে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দেবেন না।”
তবে একটা ব্যাপার স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ডেমোক্র্যাটরা দেশের মানুষকে বোঝাতে পেরেছে যে ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট হওয়া দরকার। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ইউরোপ ও রাশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা টিমোথি মরিসনের সাক্ষ্য গ্রহণ করতেন গোয়েন্দারা।
ডেমোক্র্যাটরা মনে করছেন, তাদের দলের দুই থেকে চারজন সাংসদ ভোট দিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ডেমোক্র্যাট নেতা জো কানিংহাম বলেছেন, স্বচ্ছতা আনার জন্যই এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, কী কথোপকথন হচ্ছে তা মার্কিন নাগরিকরা জানতে পারবেন, পুরো বিষয়টি বোঝার সুযোগও তাঁরা পাবেন। তবে ব্যক্তিগত ভাবে তিনি মনে করেন যে ট্রাম্পকে ইমপিচ না করলেও চলে। তবে আগে থেকে কোনও কিছু ভেবে না রেখে আগে তিনি তথ্যপ্রমাণ দেখতে চান। সূত্র : দ্য ওয়াল।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক