আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো অনিশ্চিত এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মেয়াদ শেষের পথে থাকায় ওয়াশিংটনের পদক্ষেপ সীমিত হয়ে পড়েছে। মার্কিন নির্বাচনের ছয় সপ্তাহ আগে বাইডেন প্রশাসন আবারও মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঝুঁকির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের হামলায় এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে লেবানন। দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে চালানো হামলায় বেসামরিক নাগরিকেরও মৃত্যু হয়েছে। এই হামলায় প্রথমে পেজার ও পরে ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ফলে প্রতিশোধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং এটি গাজায় চলমান সংঘাতের যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ৩৭ জন নিহত এবং প্রায় ৩ হাজার আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে হিজবুল্লাহ সদস্যদের সঙ্গে থাকা পেজারগুলো একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। বুধবার হিজবুল্লাহর সদস্যদের হাতে থাকা ওয়াকিটকি বিস্ফোরিত হয়। ইসরায়েল সাধারণত বিদেশে চালানো গোপন হামলার ব্যাপারে মন্তব্য করে না, তবে ইসরায়েল ঘোষণা দেয় যে একটি ‘নতুন যুদ্ধের যুগ’ শুরু হয়েছে। ইসরায়েলি গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, দুই হিজবুল্লাহ সদস্যের ডিভাইস হ্যাক হওয়ার সন্দেহে ইসরায়েল এই হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এক টেলিভিশন ভাষণে ‘প্রতিশোধ নেওয়া হবে’ বলে অঙ্গীকার করেছেন। একই সঙ্গে গাজায় ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ ত্যাগ না করার কথাও জানিয়েছেন। গত অক্টোবরের ৭ তারিখে হামাসের নেতৃত্বে এক আকস্মিক আক্রমণে ১ হাজার ২০০ এরও বেশি ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করার পর থেকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ সীমান্ত এলাকায় প্রায় প্রতিদিন পাল্টাপাল্টি হামলা চালালেও পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ এড়িয়ে এসেছে। হিজবুল্লাহ বলছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আক্রমণ চালিয়ে যাবে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা ও গাজায় ছয়জন জিম্মির লাশ উদ্ধারের পর থেকে যুদ্ধবিরতি আলোচনা আরও জটিল হয়ে পড়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন কায়রোতে বলেছেন, আলোচনায় যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়াকে বারবার কোনো ঘটনা বা হামলা থামিয়ে দিচ্ছে বা বাধাগ্রস্ত করছে। মার্কিন মধ্যস্থতাকারী আমোস হকস্টে সম্প্রতি ইসরায়েলে পৌঁছার পর লেবাননের বিস্ফোরণ ঘটে। গত এক বছর ধরে হকস্টেইন বৈরুত ও জেরুজালেমের মধ্যে কূটনৈতিক সমঝোতা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সীমান্তে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। ২০২২ সালে লেবানন-ইসরায়েলের সমুদ্রসীমা চুক্তির মধ্যস্থতায় সফল হওয়া হকস্টেইন এবারও সংকট নিরসনের প্রচেষ্টায় আছেন। -আল মনিটর