জার্মানির ব্রেমেনের এক কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় ইউরোপের প্রথম এআই গায়ক বেন গায়াকে তৈরি করেছে।
জুলাই মাসে তার প্রথম গান ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করা হয়েছে।
গানটি অনেকবার দেখা হয়েছে। তারা ‘বিরক্তিকর’, ‘ভয়ঙ্কর’ ইত্যাদি নানান প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি দারুণ প্রশংসাও করেছেন। তাই প্রশ্ন উঠছে, এআই কি ভবিষ্যতে ভালো গান তৈরি করবে? মানুষ সংগীত শিল্পীরা কি হারিয়ে যাবেন?
মিউজিকটেক জার্মানির সভাপতি মাটিয়াস স্ট্রোবেল বলেন, ‘মানুষের যে বৈশিষ্ট্যটা অনন্য সেটা হচ্ছে, আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে গান তৈরি করার শক্তি। আপনাকে বুঝতে হবে, এআই সেটা পারে না। এআইকে যা দিবেন সে শুধু সেটা নিয়ে কাজ করতে পারে, তাকে যা করতে বলা হয়, সে সেটা করে। নিজে থেকে কিছু করতে পারে না। তার নিজের কোনো পরিকল্পনা করার ক্ষমতা নেই। সেটা সম্ভবও না।এআই-এর চেয়ে এই বৈশিষ্ট্যে মানুষ সবসময়ই এগিয়ে থাকবে।’
ফ্লোরিয়ান শামব্যার্গার, পিয়া শ্রাইবার ও তাদের দল তিন মাসে বেন গায়াকে তৈরি করেছে। পিয়া শ্রাইবার জানান, ‘গবেষণাকে আমরা মূল অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। আমরা জানতে চাই, এআই দিয়ে আমরা কী করতে পারি, এআই আমাদের জীবনে আর কী কী প্রভাব ফেলতে পারে, ডিজিটাল ব্যবসায় এআই আরও কীভাবে সহায়ক হতে পারে, অর্থাৎ কোথায় এবং কীভাবে এটাকে কাজে লাগাতে পারি।’
ফ্লোরিয়ান শামব্যার্গার বেন গায়ার জন্য সাধারণ এআই টুল দিয়ে ছবি, ভিডিও ও মিউজিক তৈরি করেছেন।
ফ্লোরিয়ান শামব্যার্গার বলেন, ‘টেক্সট ইনপুট দিয়ে পুরো কাজটা করা হয়। ‘মিডজার্নি’ এআই প্রোগ্রাম দিয়ে এটা করা হয়। ওই প্রোগ্রাম ব্যবহার করে ছবির যেকোনো অংশে টেক্সট বসিয়ে ছবিতে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন আনা যায়। যেমন টি-শার্টের রং সাদা থাকলে আমি সেটাকে চাইলে নীল বা সবুজ করে দিতে পারি। ফলে একটা ভালো জিনিস তৈরি করা খুব সহজ হয়।’
সুনোর মতো মিউজিক সফটওয়্যারও একইভাবে কাজ করে। তবে বেন গায়ার কণ্ঠ যেন সবসময় একইরকম শোনায় সেটা নিশ্চিত করতে অনেক অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। আসলে এআই থাকুক বা না থাকুক, মানুষের সৃজনশীলতাই শেষ কথা।
স্ট্রোবেল বলেন, ‘ভবিষ্যতে আরও অনেক বাজে মিউজিক তৈরি হবে। আসলে এটা ভালো, কারণ, দিন শেষে যারা আবেগ দিয়ে, সৃজনশীলতা দিয়ে গান লিখবেন, সুর করবেন ও গাইবেন, তাদের কাজই এআই দিয়ে তৈরি গানের চেয়ে বেশি সমাদৃত হবে। দিন শেষে এটাই সত্যি কথা। একটা গান শুধু শোনার বিষয় না, কারা বানিয়েছে, তারা কী বলতে চেয়েছেন, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।’
এআই শিল্পী বেন গায়া ভালো, না খারাপ, তা বিচারের দায়িত্ব আসলে আমাদের সবার।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত