আশি ও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় নায়ক বাপ্পারাজ। নায়করাজ রাজ্জাকের পুত্র তিনি। নিজের অভিনয়গুণেও দিয়েছেন অনেক হিট সিনেমা। ১৯৮৬ সালে রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘চাঁপাডাঙার বউ’ সিনেমার মাধ্যমে পর্দায় আসেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ে নেই, সম্প্রতি গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন আবার। তার বলা কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ
সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে ধান্দাবাজ লোক বেশি হয়ে গেছে, কেন?
আসলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি থেকে ভালো লোকজন সরে গেছে, বাজে লোক বেশি হয়ে গেছে। তারা সিনেমা বানাতে চায় না, পলিটিক্স করে, দলাদলি করে, সরকারের চামচামি করে। মাঝে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিও এ রকম হয়ে গিয়েছিল। আমাদের জোর করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেত। বলত, ওইখানে যেতে হবে, সেখানে যেতে হবে। যেমন, কোনো মন্ত্রী বা পুলিশ অফিসারকে শিল্পী সমিতিতে নিয়ে এসে ফুল দিয়ে তার সঙ্গে ছবি তোলা হতো। সেই ছবি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতে বলা হতো। আমরা শিল্পী, আমাদের সঙ্গে মানুষ ছবি তুলবে। আমরা তো কারও পেছনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলব না। এটা তোষামোদী। কাজের থেকে তোষামোদীই এখানে বেশি করা হয়। এখানে আসলেই ধান্দাবাজ লোকই বেশি হয়ে গেছে।
সম্প্রতি ফেসবুকেও এ ধরনের একটি পোস্ট দিয়েছেন, এ ক্ষোভের আরও কারণ আছে কি?
ওই পোস্টে আমি যথার্থই উল্লেখ করেছি যে, ‘কতদিন ফুলের তোড়া হাতে গ্রুপ ছবি তোলার দৃশ্য দেখা হয় না।’ দেখুন, আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমাদের সিনেমা বানানোর লোক দরকার। এখানে ধান্দাবাজ লোক বেশি হয়ে গেছে। এখনো কিছু লোক আছে, তারা কোণঠাসা হয়ে আছে। দলাদলির জন্য অনেকেই অনেক জায়গায় যেতে পারছে না, দাঁড়াতে পারছে না, কথা বলতে পারছে না। কাজের লোক কমে গেছে, এজন্যই এফডিসিতে রাজনীতি চলত। এতে মনে ক্ষোভ জমাটা কী স্বাভাবিক নয়।
আসলে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রকৃত অবস্থা এখন কেমন?
ওই যে বললাম, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি থেকে ভালো লোকজন সরে গেছে, বাজে লোক বেশি হয়ে গেছে। তারা সিনেমা বানাতে চায় না, পলিটিক্স করে, দলাদলি করে, সরকারের চামচামি করে। তাহলে বুঝে নেন আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের অবস্থা এখন কেমন হতে পারে।
এ অবস্থার উত্তরণ কীভাবে সম্ভব?
আমাদের সিনেমা বানানোর লোক দরকার। এখানে কাজের লোক কমে গেছে, অবস্থার উত্তরণে এ শিল্পের লোকজনকেই সচেতন ও উদ্যোগী হতে হবে। কারণ বাহির থেকে কেউ এসে কারও ঘর গুছিয়ে দিয়ে যাবে না।
অভিনয় বা নির্মাণে আসছেন না কেন?
আবারও বলব, এখানে এখন কাজের লোক ও পরিবেশ কোনোটিই নেই, তাহলে কাজটা করব কোথায়। আমি আশা করব সবাই মিলে আমাদের দেশের প্রধান এ গণমাধ্যমের মান সমুন্নত করতে ভূমিকা রাখবে।