ইসরায়েল সাড়ে ৯ মাস ধরে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই যাচ্ছে। মাঝে মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির কথা তুললেও কোনো কাজ হয়নি। এর মধ্যে গতকাল সকালে গাজার ভিতরে ট্যাংক নিয়ে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ২২ বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইরত ইসরায়েলি সেনারা গাজার মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক গভীরে ট্যাংক নিয়ে ঢুকে পড়েছে বলে খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর।
রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নতুন হামলা ও অভিযানের ঘটনাগুলো ঘটে।
গতকাল গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর বেইত লাহায়াতে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন নিহত হন আর মধ্যাঞ্চলীয় আল-মাঘাজি শিবিরে এক সাংবাদিকসহ আরও ছয়জন নিহত হন বলে চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলে পৃথক কয়েকটি হামলায় আরও পাঁচজন নিহত হন। এর মধ্যে খান ইউনিসে নিহত দুজন হলেন এক নারী ও তার শিশু সন্তান।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাদের বাহিনী গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর আল-বালাহে ও দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে তাদের অভিযানগুলো জোরদার করে ফিলিস্তিনিদের সামরিক অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছে, রকেট জব্দ করেছে ও যোদ্ধাদের হত্যা করেছে। তারা জানায়, তাদের সেনারা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ৫০ জন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। দেইর আল-বালাহ শহরে প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দা ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আছেন। এখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো পূর্ব দিক থেকে আরও এগিয়ে এসে এই শহরের সঙ্গে খান ইউনিস শহরকে সংযোগকারী কিছু রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সেগুলো বন্ধ করে রেখেছে।
ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকগুলো খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে আল-কারারা ও হামাদ এলাকার ভিতরে ঢুকে পড়ে বহু বাসিন্দাকে তাদের আশ্রয় ও তাঁবু থেকে উচ্ছেদ করেছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এসব করতে তারা ট্যাংক থেকে ভারী গোলাবর্ষণ ও ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে জানান তারা। কিছু পরিবার কোনো আশ্রয় খুঁজে না পেয়ে রাস্তায় ও সমুদ্রসৈকতে রাত যাপন করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানা গেছে।