২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৫৮

আধুনিক ও নিরাপদ কৃষির দৃষ্টান্ত যেন ডেনমার্ক

মানিক মুনতাসির, কোপেনহেগেন থেকে

আধুনিক ও নিরাপদ কৃষির দৃষ্টান্ত যেন ডেনমার্ক

বীজ ছিটানো, নিড়ানি, চারা রোপন, সার দেওয়া, কীটনাশক ছিটানো, ফসল কাটা, মাড়াই সংগ্রহ এবং পরিবহনের কোন কাজেই কৃষকের হাতে কোন স্পর্শের প্রয়োজন হয় না ইউরোপের শীতলতম দেশ ডেনমার্কে। 

হাজার হাজর হেক্টর এলাকাজুড়ে নেই কোন আইল। উঁচু-নিচু সবুজ মাঠ যেন মনোরম কোন গালিচা। ফসলের ক্ষেতে পোকাড় আক্রমণ ঠেকাতে ড্রোন দিয়ে ছিটানো হয় বালাইনাশক ওষুধ। তবে সেটা অবশ্যই মাত্রারিক্ত নয়। মানুষের শরীর যতটুকু রাসায়নিক নিতে সক্ষম ঠিক ততটুকুই তার চেয়েও কম রাসায়নিক ছিটানো হয়। এমনকি হাজার হাজার ফার্ম রয়েছে যেগুলো অর্গানিক পদ্ধতিতে পরিচালিত। একই সঙ্গে হাজার হজার একর জমি চাষের জন্য ব্যবহার করা হয় বিশাল আকৃতির ট্রাক্টর। ওষুধ, সার, কীটনাশক ছিটানো হয় ড্রোন দিয়ে। আলু, গম, ভুট্টা, শাক, সবজি, ফলমূলসহ বিস্তৃত ফসলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় ড্রোন দিয়ে ছবি তুলে। 

এখানকার কোন জমির শতভাগ মালিকানা পায় না কৃষক। তবে কৃষিকাজের জন্য কৃষকদের বিনামূল্যে হাজার হাজর একর জমি লীজ দেওয়া হয়। কৃষকদের সার, বীজ, কীটনাশক, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ সকল সুবিধা বিনামূল্যে প্রদান করে ডেনমার্ক সরকার। আধুনিক ডেনমার্ক যেন শিল্পের চেয়ে প্রযুক্তিনির্ভর কৃষিতেই অধিক সমৃদ্ধ।  

একটি গরুর খামার এবং সৌর বিদুৎ প্রকল্প সরেজমিনে দেখাতে হার্নিং শহর থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে এক সমুদ্রের তীরে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ফার্মের মালিক জ্যাসপেল নামে ৩১ বছর বয়সী স্নাতক পাস এক যুবক। তার খামারে সাড়ে তিনশ দুধেল গাভী রয়েছে। এটি একটি অর্গানিক খামার। এ খামারের প্রতিটি গাভী বছরে সাড়ে তিন হাজার লিটার দুধ দেয়। প্রতি লিটার দুধের উৎপাদন খরচ পড়ে দশমিক ৬৬ ক্রোনা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ টাকার মতো। 

এগ্রোম্যাকের ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর বৃহৎ এগ্রো প্রদর্শনীতে ডেনমার্কের প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি ব্যবস্থার সবদিক তুলে ধরা হয়। বীজ বপন, চারা রোপন, নিড়ানী, কীটনাশক ছিটানে, ফসল কাটা, মাড়াই, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বাজারজাত করণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তি আর যন্ত্রের ব্যবহার।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

সর্বশেষ খবর