জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগে শিক্ষক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। পর্যাপ্ত শিক্ষক আর শ্রেণি কক্ষের অভাবে এসব বিভাগের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে আটকা পড়েছেন ৩ মাস থেকে ১ বছরের সেশনজটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সাতটি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ। মোট সাতজন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন ছুটিতে। বাকি পাঁচজন শিক্ষক দিয়েই চলছে বিভাগটি। শিক্ষকের অভাবে নিয়মত ক্লাস না হওয়ায় ইতোমধ্যেই বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পড়েছেন ৬ মাস থেকে ১ বছরের সেজনজটে।
এদিকে পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগে মোট পাঁচটি ব্যাচের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র তিনজন এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের পাঁচটি ব্যাচের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র চার জন শিক্ষক রয়েছেন।
অন্যদিকে আইন ও বিচার বিভাগেও একই চিত্র। পাঁচটি শিক্ষাবর্ষের প্রায় সাড়ে তিন’শ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র সাত জন। আলাদা একটি অনুষদ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠার চার বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা এখনো পায়নি নিজস্ব শ্রেণি কক্ষ। এছাড়াও শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগেও। তিনটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষক রয়েছেন চারজন।
পর্যাপ্ত শিক্ষক আর শ্রেণি কক্ষের অভাবে ঠিকমত ক্লাস করতে পারছেন না এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। চাপ সামলাতে প্রতিদিন শিক্ষকরা পাঁচটিরও বেশী ক্লাস নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রয়োজনের তাগিদে এসব বিভাগুলোতে ‘গেস্ট টিচার’ দিয়েও ক্লাস নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সেশনজটের কবল থেকে মুক্ত হচ্ছেনা শিক্ষার্থীরা। ফলে বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অন্য বিভাগের বন্ধুরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছে অথচ আমরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনাই শেষ করতে পারলাম না।” এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন বলেন, “ক্যাম্পাসে দীর্ঘকালীন ছুটি ও আমাদের সাময়িক কিছু সমস্যার জন্য শিক্ষক নিয়োগে একটু দেরি হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৪ এপ্রিল ১৬/ সালাহ উদ্দীন