বিভাগীয় শহরগুলোতে এখন চলছে ঢিলেঢালা লকডাউন। চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ প্রায় সব শহরেই দাপট নিয়ে চলাচল করছে রিকশা। কোথাও খুলছে দোকানপাট। তুচ্ছ অজুহাতে ঘরের বাইরে চলে আসছে সাধারণ মানুষ।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে এখন রিকশাচালকদের দাপট। সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে প্রতিনিয়িত। নিরুপায় হয়ে গাড়ি সংকটে রিকশাচালকদের চাহিদামতো অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে অফিস বা নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে মানুষের। এতে প্রতিদিনই হচ্ছে কোনো না কোনো তর্কবিতর্ক এবং উঠছে নানা প্রশ্নও। লকডাউনে ফাঁকা শহরের প্রধান রাস্তাঘাট। চলছে না গণপরিবহন। তার জায়গা দখলে নিয়েছে রিকশা। এদের কেউ স্বাভাবিক সময়ের মতো ন্যায্য ভাড়া দাবি করছেন। কেউ চাইছেন বাড়তি। অনেক চালক আবার সম্পূর্ণ মনগড়া ও অযৌক্তিক ভাড়া দাবি করছেন বলেও অভিযোগ আছে। এসব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে যাত্রীদের। সন্তুষ্ট ও অসন্তুষ্টি দুটোই আছে তাদের মাঝে। মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ২ নম্বর গেট, চকবাজার, কাপ্তাই রাস্তার মাথাসহ নগরীর বিভিন্ন স্পটে এমন দৃশ্য সরেজমিনে দেখা যায়।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীতে নিবন্ধিত রিকশা আছে ৭০ হাজার ১টি। এর বাইরে আরও প্রায় ৫০ হাজার নিবন্ধনহীন রিকশা রয়েছে। বাড়তি আয়ের আশায় প্রতি বছর রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন ছুটে আসে চট্টগ্রাম শহরে। যাদের সিংহভাগ ঈদ পর্যন্ত রিকশা চালানোকে সাময়িক পেশা হিসেবে বেছে নেয়। অবশ্য এবার বিগত বছরগুলোর তুলনায় মৌসুমি রিকশাচালকদের উপস্থিতি করোনাসহ নানা কারণে কম দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে হওয়া লোকজন গণপরিবহন না থাকায় বাধ্য হচ্ছেন রিকশায় চড়তে। এ সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন রিকশাচালকরা। নিচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়াও।রাজশাহী : লকডাউনে রাজশাহীর পথে পথে তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে মানুষকে। জরুরি কাজ ছাড়া যারা বাইরে বের হয়েছেন, তাদের গুনতে হয়েছে জরিমানাও। এদিন রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট বন্ধ ছিল। তবে কাঁচাবাজারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গলিপথগুলোতে চলাচল করেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।
সিলেট : লকডাউনে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে কমেছে যানবাহন চলাচল। আগের দিন নগরীর ১৪টি পয়েন্টে বসানো বাঁশের ব্যারিকেড গতকাল বহাল ছিল। ফলে যারা প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিলেন তারা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন। ব্যারিকেড ছাড়াও পুলিশ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন আটকে পাস দেখতে চেয়েছে। পাস দেখাতে না পারলে ঠুকে দিয়েছে মামলা। গতকাল নগরীর কোর্টপয়েন্ট, চৌহাট্টা ও আম্বরখানাসহ বিভিন্নস্থানে পুলিশ যানবাহন আটকে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হয়েছেন মনে হলেই যানবাহন থেকে নামিয়ে দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া কাগজপত্র ও পাস দেখাতে ব্যর্থ হওয়া যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা দিতে দেখা গেছে। গতকাল রাস্তায় যানবাহন চলাচল কমলেও আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে জনসমাগম। নগরীর বন্দরবাজার ও আম্বরখানায় কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা মানুষের ভিড় ছিল দিনভর। বাজার করতে আসা লোকজনের মধ্যে ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই।