বগুড়ায় মৌসুমি বৃষ্টিপাতে শহরের অধিকাংশ সড়ক তলিয়ে গেছে পানিতে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন সড়কে কোমরসমান পানি জমে যায়, সৃষ্টি হয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। চলাচলে বিপর্যয় নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের ওপর।
বগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (১৪ জুলাই দুপুর ৩টা থেকে ১৫ জুলাই দুপুর ৩টা পর্যন্ত) ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ।
দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৃষ্টিতে শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, শেরপুর সড়ক, পার্ক রোড, স্টেশন রোড, খান্দার সড়ক, গালাপট্টি, টেম্পল রোড, ফতেহ আলী বাজার, চকযাদু, কাটনারপাড়া, বড়গোলা সহ প্রধান সড়কগুলো পানিতে ডুবে যায়। বিভিন্ন এলাকায় সড়কের দুই পাশের নালার ময়লা-আবর্জনায় ভরা পানি উপচে সড়কে এবং বাসাবাড়িতে প্রবেশ করে।
নগরবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ ১৯ বছরেও বগুড়া পৌরসভা এলাকায় কোনো সুনির্দিষ্ট উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা হয়নি। নালাগুলো সরু এবং অপরিচ্ছন্ন থাকার ফলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হয়ে রাস্তায় জমে থাকে। বৃষ্টির সাথে সাথেই শহরজুড়ে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। এতে শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও যানবাহনের চালকেরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
বাদুতলা এলাকার বাসিন্দা সেলিম রেজা জানান, 'চকযাদু সড়কে প্রতিবার বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। আজকের বৃষ্টিতে কোমর পানি উঠে গেছে।'
বগুড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শহরের কিছু এলাকায় ড্রেন সংস্কার করা হয়েছে এবং যেসব জায়গায় সমস্যা রয়ে গেছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পৌরসভার কর্মকর্তারা বলেন, বর্ষার সময় যাতে দুর্ভোগ না হয়, সে লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।
তবে স্থানীয়দের মতে, সাময়িক ড্রেন পরিস্কার করেই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। শহরের সার্বিক পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়া এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান অসম্ভব।
বগুড়া আবহাওয়া কার্যালয়ের টেলিপ্রিন্টার অপারেটর মো. শাহিদুজ্জামান জানান, বগুড়ায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা এ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। তিনি আরও জানান, বৃষ্টির কারণে বগুড়ায় তাপমাত্রা কমেছে। ফলে ভ্যাপসা গরম দূর হয়েছে। আগামীকালও বগুড়ায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা