বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সর্বশ্রেষ্ঠ সুলতান

মহামতি সোলায়মান ছিলেন অনন্যসাধারণ নৃপতি। তার কীর্তিকলাপ পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয়, তিনি ছিলেন নিঃসন্দেহে সর্বাপেক্ষা পরাক্রমশালী ও সর্বশ্রেষ্ঠ সুলতান। তিনি কেবল তুর্কি ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়েরই সূচনা করেননি, বস্তুতপক্ষে লেনপুলের ভাষায় তার রাজত্বকালকে ‘তুর্কি ইতিহাসের স্বর্ণযুগ’ বলা হয়ে থাকে। ঐতিহাসিকরা ষোড়শ শতাব্দীর অবদান সম্পর্কে একমত, কারণ এই যুগে শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্পকলা এবং সমাজ ও সংস্কৃতির প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। সোলায়মানের যুগ শ্রেষ্ঠত্বের যুগ। ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ নায়কদের আবির্ভাব হয় এই ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে, যাদের অবদান ব্যতীত পৃথিবীর ইতিহাস ম্লান হয়ে যেত; যেমন ইংল্যান্ডে মহারানী প্রথম এলিজাবেথ, ফ্রান্সের সম্রাট প্রথম ফ্রান্সিস, অস্ট্রিয়ার সম্রাট প্রথম চার্লস, পারস্যের সাফাভি বংশের প্রতিষ্ঠাতা শাহ ইসমাইল, রাশিয়ার কবি আইভানোভিচ, পোল্যান্ডের সিগিসমন্ড এবং মুঘল ভারতের সম্রাট আকবর। এই যুগে আবির্ভূত হন আমেরিকা আবিষ্কারক কলম্বাস, সাহিত্যিক স্পেনসার ও শেকসপিয়ার, শ্রেষ্ঠ নাবিক এবং পর্যটক ড্রেক ও ব্যালে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর গ্রিক পণ্ডিতরা ইতালিতে গমন করায় রেনেসাঁ অর্থাৎ চিন্তা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নবজাগরণ দেখা দেয়। এ ছাড়া ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন অথবা প্রোটেস্ট্যান্ট গির্জার আবির্ভাব হয় মার্টিন নুথারের ধর্মপ্রচারের সঙ্গে সঙ্গে এ ষোড়শ শতাব্দীতেই। ভৌগোলিক আবিষ্কারের ফলে মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায়। এসব কারণে ঐতিহাসকদের মতে, ১৪৫৩ সালে আধুনিক যুগের সূত্রপাত হয়। এমতাবস্থায় মহামতি সোলায়মান আধুনিক যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ নৃপতি বলে অভিহিত হন। এই কারণে তাকে ‘যুগের স্রষ্টা ও পুরোধা’ বলে চিহ্নিত করা হয়। এভারসলের মতে, মহামতি সোলায়মানের রাজত্বকাল অটমান তুরস্কের ইতিহাসের সর্বোত্কৃষ্ট যুগ। তিনি দীর্ঘ ৪৬ বছর রাজত্ব করে তুরস্ক সাম্রাজ্যের সীমানা বৃদ্ধি করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর