বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আমলা আচরণ

কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

আমলাতান্ত্রিকতা নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় সমালোচনা চলছে যুগ যুগ ধরে। আমলা মানেই আমাদের দেশে এখন উন্নয়ন প্রতিবন্ধক লাল ফিতার পূজারিই শুধু নয়, তাদের কেউ কেউ যে সভ্যতা-ভব্যতা বিবর্জিত আজব কিছুতে পরিণত হয়েছেন তা বললেও হয়তো অত্যুক্তি হবে না। আমলাদের একাংশের বেপরোয়া এবং অপেশাদার মনোভাবে সরকার তথা প্রশাসনে বিব্রত অবস্থার উদ্ভব ঘটেছে। বান্দরবানের আলীকদমের চৈক্ষ্যং আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার ফুটবলের ফাইনাল খেলা ছিল। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও। খেলার হার-জিত নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলেও একপর্যায়ে সমঝোতা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানে উত্তেজিত হয়ে কথা বলাটাকে ‘অসহনশীল’ আচরণ হিসেবে ধরে নেন ইউএনও। তিনি তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সবাইকে বলেন, আপনারা যত দিন পর্যন্ত সহনশীল না হতে পারবেন, তত দিন ট্রফিগুলো আমানত হিসেবে থাকবে। আরেকটি ম্যাচ হলে তারপর দেব। তাঁর এ বক্তব্যে সবাই ‘না না’ বলতে থাকলে তিনি ‘আমি ট্রফিটা ভেঙে এখন খেলা শুরু করব’ বলেই ট্রফি দুটি সবার সামনে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেন। মাঠের এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনাটি ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়। অসহিষ্ণু ওই আমলাকে ঢাকা বিভাগে বদলি করতে বিভাগীয় কার্যালয়ে ন্যস্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আলীকদম ইউএনওর স্বেচ্ছাচারী আচরণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। একে সারা দেশের আমলাদের আচরণের অংশ বলে ভাবলেই ঠিক হবে। জনমনে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তাঁকে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে শাস্তি না বলে পুরস্কৃত করা বলেও অনেক অভিহিত করছেন। আমলা ছাড়া প্রশাসন চলে না এটি যেমন সত্য, তেমন তাঁরা কোনো অবস্থায়ই নিজেদের রাজারানি ভাববেন না- এমনটিও প্রত্যাশিত। তাঁদের স্বেচ্ছাচারের বিষয়ে সরকারের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙলে তা উত্তম বলে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর