'বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়েঘরে থেকে করো শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে' কবি রজনী কান্ত সেনের এই অমর কবিতাটি এখন এদেশে ৩য় শ্রেণীর বাংলা বইয়ে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের কবিতা পড়েই এখনকার শিক্ষার্থীরা বাবুই শিল্পের অলৌকিক কথা জানতে পারছে। এখন আর চোখে পড়েনা বাবুই পাখি ও তার নিজের তৈরী দৃষ্টিনন্দন সেই ছোট্ট বাসা তৈরির নৈসর্গিক দৃশ্য।
বরিশালের গৌরনদী/ আগৈলঝাড়/ উজিরপুর/ মুলাদী/ সহ অনেক উপজেলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির বয়ন শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খড়, তালপাতা, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে বাবুই পাখি উঁচু তালগাছে বাসা বাঁধে। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা অক্ষুণ্ন থাকত। বাবুই পাখির শক্ত বুননের এ বাসাটি শিল্পের এক অনন্য সৃষ্টি যা টেনেও ছেঁড়া সম্ভব নয়। একসময় বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সারি সারি উঁচু তালগাছে বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা দেখা যেত।
এখন তা আর সচরাচর চোখে পরেনা। কালের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে সেই দৃষ্টি ভোলানো পাখিটিকেও তার নিজের তৈরী বাসা যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আরও ফুটিয়ে তুলত, তা আজ আমরা হারাতে বসেছি।
বর্তমানে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসছে প্রকৃতির এক অপরূপে সৃষ্টি বাবুই পাখি। পাখি প্রেমিকরা জানান, যদি গ্রাম বাংলার তাল গাছ খেজুর গাছ সহ বড় ধরনের গাছ পালা গুলো না কাটা হয় তা হলে বাবুই পাখি ও বাসা গ্রামাঞ্চলে দেখা যাবে।