শিরোনাম
১ মার্চ, ২০২৩ ১৭:১৯

‘বইওয়ালা দাদুভাই’ এর প্রয়াণ দিবস

অনলাইন ডেস্ক

‘বইওয়ালা দাদুভাই’ এর প্রয়াণ দিবস

পলান সরকার

পলান সরকার একজন শিক্ষক ও সমাজকর্মী। রাজশাহী জেলার ২০টি গ্রাম নিয়ে গড়ে তোলেন অভিনব শিক্ষা আন্দোলন। নিজের টাকায় বই কিনে তিনি পড়তে দেন পিছিয়ে পড়া গ্রামের মানুষকে। 

সামাজিকভাবে বিশেষ অবদান রাখায় ২০১১ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। 

প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে কাঁধে ঝোলাভর্তি বই নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। মাইলের পর মাইল হেঁটে একেকদিন একেক গ্রামে যান। বাড়ি বাড়ি কড়া নেড়ে আগের সপ্তাহের বই ফেরত নিয়ে নতুন বই পড়তে দেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি পরিচিত ‘বইওয়ালা দাদুভাই’ হিসেবে।

১৯২১ সালের ১ আগস্ট নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পলান সরকারের জন্ম নাম ছিল হারেজ উদ্দিন সরকার। তবে জন্মের পর থেকেই মা ‘পলান’ নামে ডাকতেন। মাত্র পাঁচ মাস বয়সে তার বাবা হায়াত উল্লাহ সরকার মৃত্যুবরণ করেন। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর অর্থনৈতিক সংকটে লেখাপড়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলেন।

১৯৯০ সাল থেকে বাউসা হারুন অর রসিদ শাহ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিবছর যারা মেধাতালিকায় প্রথম দশটি স্থান অর্জন করত তাদের বই উপহার দিতেন পলান সরকার। এরপর অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তার কাছে বইয়ের আবদার করলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি তাদেরও বই দিবেন তবে তা ফেরত দিতে হবে। এরপর গ্রামের মানুষও তার কাছে বই চাইতে শুরু করে। এভাবেই শুরু হয় বই পড়া আন্দোলনের ভিত।

১৯৯২ সালে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ায় পলান সরকারকে হাঁটার অভ্যাস করতে হয়। তখনই তার মাথায় এক অভিনব চিন্তা আসে।

তিনি স্কুলকেন্দ্রিক বই বিতরণের প্রথা ভেঙে বাড়ি বাড়ি বই পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি তিনি বইও উপহার দিতেন। এছাড়া যারা তার চালকলে দেনা পরিশোধ করে তাদেরও তিনি বই উপহার দিতেন। ২০০৯ সালে রাজশাহী জেলা পরিষদ তার বাড়ির আঙিনায় একটি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করে।

২০১৯ সালের ১ মার্চ মারা যান পলান সরকার।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর