প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে রয়েছে। তবে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শত্রু এখন ভুয়া তথ্য। এটি পরিকল্পিতভাবে, বিপুল অর্থ ব্যয়ে ছড়ানো হয় এবং মুহূর্তেই উত্তেজনা সৃষ্টি করে। যখন সত্য প্রকাশ পায়, ততক্ষণে মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলে।’ গতকাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সাক্ষাৎ করতে এলে তাঁদের এ আশঙ্কার কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
আইআরআই প্রতিনিধিদলটি জানায়, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আইআরআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস্টোফার জে. ফাসনার বলেন, ‘আমরা ফেব্রুয়ারিতে একটি শক্তিশালী নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করব। নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভোট চলাকালে সহিংসতা কমাতে সাহায্য করবে।’ ফাসনার বলেন, ‘সব দলই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। পূর্ববর্তী নির্বাচনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তুলনা করলে এবার একটি ইতিবাচক পরিবেশ দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের খুবই ভালো লাগছে। আমরা স্পষ্ট পার্থক্য অনুভব করছি।’
ক্রিস্টোফার জে. ফাসনারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির (সিএনএএস) ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক, সিনিয়র ফেলো লিসা কার্টিস; আইআরআইয়ের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান; আইআরআইয়ের রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকম্যান।
প্রতিনিধিরা বলেন, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ছাত্র সংগঠনসহ নাগরিক সমাজের স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। তাঁরা নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকির বিষয়েও আলোচনা করেন। ক্রিস্টোফার ফাসনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া ছবি তৈরি ও জনমত প্রভাবিত করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এটি অনেক তরুণের জীবনের প্রথম ভোটের অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ২৭ বছরের নিচে। আমরা চাই তারা যেন সন্তুষ্ট থাকে। আমাদের নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর।’তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই চার্টার দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের প্রতি প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। এটি আমাদের নির্বাচনের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে।
বেশির ভাগ দল ইতোমধ্যে চার্টারে স্বাক্ষর করেছে, আশা করি বাকিরাও শিগগিরই যোগ দেবে।’