ইতিহাস গড়লেন সানায়ে তাকাইচি। পুরুষশাসিত জাপানের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনিই হলেন দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। গতকাল পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে জয়লাভ করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) এই কট্টর-রক্ষণশীল নেত্রী দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হলেন। তবে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেও জাপানের নারী অধিকার কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন নারী নেত্রী হওয়া সত্ত্বেও তিনি কি সমাজের চিরাচরিত কাঠামোকে পরিবর্তন করতে পারবেন? তিনি আসলে কতটা নারীবান্ধব? ৬৪ বছর বয়সি সানায়ে তাকাইচি সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের ভক্ত। নিজেকে জাপানের আয়রন লেডি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত তাকাইচি। তার মতোই কঠোর রক্ষণশীল নীতিতে বিশ্বাসী।
তার প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে দেশের তরুণীরা স্বাগত জানালেও একই সঙ্গে তার রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করেছেন। ২১ বছর বয়সি আইদা ওগুরা মনে করেন, এ খবরকে নারী ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতার জন্য বিশাল সুযোগ হিসেবে দেখাটা খুবই সরল ব্যাখ্যা। তার মতে, তাকাইচির রক্ষণশীল নীতিগুলো উল্টো পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থাকেই জিইয়ে রাখছে। তাকাইচি সমলিঙ্গ বিয়ে এবং বিবাহিত দম্পতিদের আলাদা পদবি রাখার আইনের ঘোর বিরোধী। তিনি মনে করেন, পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নারীদের ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন করা উচিত। এ ছাড়া তিনি রাজপরিবারে পুরুষ-অনুক্রমের পক্ষে। যদিও নির্বাচনি প্রচারের সময় তিনি কর্মীদের জন্য শিশু যত্নের সুবিধা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে কর-ছাড়ের কথা বলেছিলেন কিন্তু তার সামগ্রিক অবস্থান নারী অধিকারের প্রগতিশীল পদক্ষেপের বিপরীতেই। তাকাইচির এ ঐতিহাসিক যাত্রা মাত্র শুরু। অর্থনৈতিক স্থবিরতা, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করা এবং অসন্তুষ্ট ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার মতো বহু চ্যালেঞ্জ তার সামনে। এ ছাড়া, দায়িত্ব গ্রহণের কিছুদিনের মধ্যেই তাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে লিঙ্গ সমতার বিষয়গুলো তার সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় সম্ভবত ওপরের দিকে থাকবে না। -বিবিসি