দুর্নীতি নিয়ে পানামা পেপারসের পর এবার ফাঁস হল প্যারাডাইস পেপারস। যেখানে বিশ্বজুড়ে ঘটিত আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য দিল ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে)।
বিশ্বের ১০০টি সংবাদসংস্থার যৌথ তদন্তে উঠে এসেছে প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ নথিপত্রের বিপুল ভাণ্ডার।
প্রাথমিক তথ্যে যেটুকু পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিদেশের কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্যে বিনিয়োগ করেছেন ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যসচিব, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও।
এর আগে ২০১৩ সালের পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির পরবর্তী পর্যায় হিসেবে এই তদন্তের নাম দেওয়া হয়েছে প্যারাডাইস পেপার্স। বিত্তশালীদের এই তালিকায় নাম রয়েছে বহু ভারতীয় শিল্পপতি ও রাজনীতিকেরও।
আগামী কয়েক দিনে ৪০টি রিপোর্টে এই কালো টাকার তথ্য ফাঁস করতে চলেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। প্রথম দিনের তথ্যে বিপদে পড়েছেন মোদীর সরকারের অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা।
তবে বাংলাদেশের কারও নাম এ তালিকায় আছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি।
বারমুডার আইনি সংস্থা অ্যাপলবি এবং সিঙ্গাপুরের এশিয়াসিটি ট্রাস্ট এবং করফাঁকির স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত ১৯টি গোপন সংস্থার এই বিপুল তথ্যভাণ্ডার সংগ্রহ করে জার্মান সংবাদপত্র স্যুডডয়চে সাইটুং।
সেই তথ্যই তারা ভাগ করে নিয়েছে আইসিআইজে -র সঙ্গে। আইসিআইজে -র অন্যতম সহযোগী হিসেবে তালিকায় থাকা ভারতীয়দের তথ্য অনুসন্ধান করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস৷ তাতেই দেখা গিয়েছে কর ফাঁকি দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টাকা সরানোর এই খেলায় সামিল বিশ্বের তাবড় ধনকুবের , রাষ্ট্রপ্রধান , শিল্পপতি ও রাজনীতিকরা।
রবিবার মধ্যরাতে ফাঁস হওয়া এই কেলেঙ্কারিতে আপাতত সবচেয়ে বড় নামটি ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের। জানা গিয়েছে , রানির নিজস্ব সম্পত্তির প্রায় ১৩ মিলিয়ন ডলার বিদেশে লগ্নি করা হয়েছে।
অন্যদিকে পানামা পেপার্সের জেরে গদি হারিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। এবার প্যারাডাইস পেপার্সে নাম জড়াল পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শওকত আজিজেরও। ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও তাঁর নির্বাচনী তহবিলের দায়িত্বে থাকা স্টিফেন ব্রনফ্যান এই তালিকায় থাকায় বিপাকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও। তীব্র চাপে পড়েছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উইলবার রসও। নয়ের দশকে ট্রাম্পকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন রস। কৃতজ্ঞতার পুরস্কার হিসেবে নিজের প্রশাসনে রসকে বাণিজ্যসচিবের পদ দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্ত্ত প্যারাডাইস পেপার্সের তথ্য বলছে , একটি জাহাজ কোম্পানি থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ লাভ করেছেন রস।
ওই জাহাজ কোম্পানিটি আবার একটি রুশ তেল ও গ্যাসের কোম্পানির অন্যতম শেয়ারহোল্ডার যার সঙ্গে জড়িত রয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জামাই ও আরও দুই ব্যক্তি। এই সংস্থাটির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আগে থেকেই। রুশ যোগ নিয়ে চাপে থাকা ট্রাম্পের উপর এই ঘটনা নিঃসন্দেহে আরও চাপ বাড়াবে।
সূত্র: এই সময়
বিডিপ্রতিদিন/ ৬ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান