২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ইউনিটে চান্স পেয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার রাফিয়া সুলতানা কুইন। ১৭ আগস্ট তার জীবনের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস ছিল—কিন্তু তার আগেই থেমে গেল জীবন।
বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে রাজশাহীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই মেধাবী শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
রাফিয়া ছিলেন ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল খালেক আহমেদের ছোট মেয়ে। সম্প্রতি হঠাৎ অ্যাজমা ও জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় আইসিইউতে, সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
ভোলাহাট সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে রাফিয়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটে ৪৫২তম, ‘বি’ ইউনিটে ৪৭তম, ‘সি’ ইউনিটে ৪৩তম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬তম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৩৯তম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬২৯তম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮তম এবং গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫৮তম স্থান অর্জন করেন তিনি।
তবুও সব বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিয়ে রাফিয়া বেছে নিয়েছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)। ভর্তিও সম্পন্ন হয়েছিল। শুরু হওয়ার কথা ছিল নতুন এক অধ্যায়ের—কিন্তু নিয়তির নির্মমতায় সেই অধ্যায় আর শুরু হলো না।
তার বাবা আব্দুল খালেক আহমেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “ছোট মেয়ে রাফিয়া ছিল আমার আশা-ভরসা। সে শুধু আমার না, পুরো ভোলাহাটবাসীর গর্ব ছিল।”
ভোলাহাটের প্রবীণ সাংবাদিক গোলাম কবির বলেন, “রাফিয়া সুলতানার অকাল মৃত্যুতে এলাকা শোকে স্তব্ধ। তার শিক্ষা অর্জন ছিল এলাকার অহংকার। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক