শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আসামি না হয়েও কারাদণ্ড নিয়ে ঘুরছেন!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার মাদক মামলায় অপরাধ না করেও ১০ বছরের কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে ঘুরছেন নুরুল বশর। এ থেকে তার মুক্তির জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ও চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আদালত আজিজ আহমেদ ভূঞার আদালতে নুরুল বশর এ আবেদন করেছেন। আদালত আগামী ১০ অক্টোবর শুনানির জন্য দিন ধার্য রেখেছেন। নুরুল বশর কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বালুখালী সৈয়দের বাড়ির সৈয়দ কাসিমের ছেলে। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাঙ্গুনিয়ার উত্তর পদুয়ার সুখবিলাস ইসলামিক মিশনারি সেন্টার গেট থেকে জোহর আলমকে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে জোহর নিজের নাম গোপন রেখে নুরুল বশরের নাম, পিতা ও মাতার নামসহ পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ব্যবহার করে। কিন্তু নুরুল বশরের আইডি কার্ডে নাম নুরুল বশর থাকলেও মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র ও মামলার রায়ে মো. নুরুল বশর উল্লেখ করা হয়। অন্যদিকে, নুরুল বশরের পিতার নাম এনআইডি কার্ডে সৈয়দ কাসিম থাকলেও মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র ও মামলার রায়ে সৈয়দ কাশেম উল্লেখ করা হয়েছে। মায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- কুলসুমা বেগম।

মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেলের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুহাম্মদ খোরশেদ আলম বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় এ মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রামের ‘ক’ সার্কেলের পরিদর্শক জীবন চাকমা ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ৩ মার্চ হাই কোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ আসামিকে জামিন দেয়। এক বছর ৯ মাস ১৮ দিন পর ২০২০ সালের ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বশর জামিনে মুক্তি পান। আদালতে পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন। এদিকে গত ৬ আগস্ট জোহর আলমকে একটি মামলায় গ্রেফতার করে টেকনাফ থানা পুলিশ। বর্তমানে জোহর কক্সবাজার কারাগারে বন্দি। নুরুল বশরের আইনজীবী সেলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, নুরুল বশরের নাম ঠিকানা জালিয়াতি করে ব্যবহার করে মূল আসামি জোহর আলমের জালিয়াতির রহস্য উদঘাটন এবং এর সঙ্গে জড়িত জোহরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও প্রতিকার চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী ১০ অক্টোবর নিয়মিত আদালতে শুনানির জন্য রেখেছে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর