বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বিকৃত যৌনাচারের শিকার হচ্ছে শিশু

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বিকৃত যৌনাচারের শিকার হচ্ছে শিশু

চট্টগ্রামে বিকৃত যৌনাচারের শিকার হচ্ছে শিশুরা। চকলেট, চিপস কিংবা লোভনীয় খাবারের ফাঁদে ফেলে তাদের ওপর চালানো হচ্ছে বিকৃত যৌনাচার। অতঃপর ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করতে হত্যা করা হচ্ছে তাদের। গত দুই মাসে চট্টগ্রাম নগরীতে ধর্ষণের পর খুনের শিকার হয়েছে দুই শিশু। অবুঝ শিশুর ওপর বিকৃত যৌনাচারকে নৈতিকতার চরম অবক্ষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

অপরাধ বিজ্ঞানী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং অরাজকতা। তাই এ ধরনের ঘটনা রোধে সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’

সিএমপির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পংকজ দত্ত বলেন, ‘যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে তখন আমাদের চেষ্টা থাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করার।’

চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া ধর্ষণ মামলা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চট্টগ্রামে ধর্ষণের শিকার হওয়া বেশির ভাগই শিশু এবং কিশোরী। যাদের বয়স ৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। আসামি ও ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগই ছিন্নমূল, নিম্নবিত্ত পরিবারের। তারা পরস্পরের আত্মীয় কিংবা পরিচিত। ধর্ষণের শিকার শিশুদের চকলেট, চিপস, বিরানি কিংবা লোভনীয় খাবারের লোভ দেখিয়ে করা হয় ধর্ষণ। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে করা হয় হত্যা। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমফেএফ) ‘বাংলাদেশ শিশু পরিস্থিতি ২০২১’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সম্প্রতি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং শিশুদের জনসমাগমের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুরো দেশে ৮১৮ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৪ জনকে। ২৪ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে লক্ষণ দাশ নামে দোকান কর্মচারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১২ সেপ্টেম্বর জেলার ফটিকছড়ি উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মোহাম্মদ হানিফ নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর বন্দর থানাধীন পোর্ট কলোনির ৮ নম্বর সড়কের মুখ থেকে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। জড়িত অভিযোগে ওসমান হারুন মিন্টু নামে এক রিকশাচালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ আগস্ট জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় নুরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষককে। ১৩ মার্চ নগরীর হালিশহর থানা এলাকায় ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। জড়িত অভিযোগে আলমগীর নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সর্বশেষ খবর