ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ফলাফল নিয়ে অনেক জল ঘোলা করা হল। আজকে পুনরায় যে ফলাফল প্রকাশিত হল, তাতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে, গত মাসে প্রকাশিত ফলাফলে সামনের সারিতে থাকা বেশীরভাগ ছাত্রছাত্রীরই আজকের ফলাফলেও সামনের দিকেই আছে।
উদাহরণস্বরূপ বিজ্ঞান বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ এবং মানবিক বিভাগে ঘ ইউনিটের নতুন প্রকাশিত ফলাফলের একদম সামনে থাকা কয়েকজনের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যাক। বিজ্ঞান বিভাগের গত পরীক্ষায় যে তৃতীয় হয়েছিল, সে নতুন পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে। ব্যাবসায় শিক্ষায় গতবারের দ্বিতীয় এবারেও দ্বিতীয়, আর মানবিকে গতবারের প্রথম এবার দ্বিতীয়। সামনের সারিতে থাকা বাকিদের বেশিরভাগের ফলাফল পর্যালোচনা করলেও এই চিত্রের পুনরাবৃত্তি দেখা যাবে। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, চেক করে দেখতে পারেন।
তাহলে গত ফলাফলের পরে 'ব্যাপক হারে' প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে আকাশ পাতাল তোলপাড় করা হল, তার উদ্দেশ্য কি? উত্তরের দুইটা অলটারনেটিভ আছে। প্রথমত, নির্বাচনের বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার অপচেষ্টা। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ছাত্রদল যখন ডীনের পদত্যাগ চেয়ে স্টেটমেন্ট দেয়, আর কিছু ভুঁইফোড় অনলাইন সংবাদমাধ্যম তা ফলাও করে প্রচার করে তখন সেই সন্দেহটা আরও সুদৃঢ় হয়।
দ্বিতীয় অপশনটা আরো ক্রিটিকাল। আচ্ছা, প্রশ্নফাঁস হল, কিন্তু কারণ এবং সমাধান খুঁজতে কাউকেই তেমন তৎপর হতে দেখা গেল না। অথচ ডিনের পদত্যাগ প্রশ্নে উথাল পাথাল শুরু হয়ে গেল.. কিছু শিক্ষক, ফ্রন্টস্টেজে না এলেও ব্যাকস্টেজে বসে উস্কানিও দিলেন কিনা সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। আবার সামনেই, এই ফেব্রুয়ারিতেই ডীন নির্বাচন। সেইসব ব্যাকস্টেজের উস্কানিদাতারা সেই আগত নির্বাচনের প্রার্থী কিনা, সেটাও আরেক প্রশ্ন। আর দুই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানোর দ্বায়িত্ব নাহয় আপনাদের রইল।
কোনো অকারেন্স ঘটার পর অবধারিতভাবে দোষ বর্তায় দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উপর। কিন্তু, এই অবধারিত বিষয়টি যেহেতু সবার জানা, তাই দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তিকে ইমেজ সঙ্কটে ফেলে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে আসল সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে সমস্যা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিকে আড়াল করাও কিন্তু খুব সহজ। খুব অবধারিত, কখনো কখনো।
শুরুর কথা দিয়েই শেষ করি। জল ঘোলা করার পর ঘোলা জলে যে মাছ শিকার করতে চায় সেই কিন্তু প্রথমত জলটা ঘোলা করে। ধন্যবাদ!