২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৩:১৫

শি জিনপিংয়ের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে চীনে

ফারাজী আজমল হোসেন

শি জিনপিংয়ের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে চীনে

ফারাজী আজমল হোসেন

বিশ্ব এখন ’২৩ সালের দ্বারপ্রান্তে। এ বছরের জন্য সুখবর বলতে কিছু নেই। বরং চরম উৎকণ্ঠার খবরটি হচ্ছে নতুন বছরে দরিদ্র দেশগুলো মঙ্গাকবলিত হতে পারে। এই সম্ভাব্য দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশ নিরাপদ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপরও সতর্ক অবস্থানে দেশ। কারণ পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে তার আঁচ পড়শির গায়ে লাগে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়েছেন। ফসল উৎপাদন বাড়াতে এবং অযথা ব্যয় পরিহার করতে বলেছেন।

সবচেয়ে ভীতিকর যে খবরটি ইতমধ্যে চাউর হয়েছে তা হচ্ছে এ বছরই চীন তাইওয়ান দখলের জন্য হামলা চালাতে পারে। ইতিমধ্যে তারা তাইওয়ানের চারদিক যুদ্ধজাহাজ দিয়ে ঘিরে রেখেছে। চীনের অনুসন্ধানী জঙ্গি বিমান দফায় দফায় তাইওয়ানে চক্করও কাটছে। এসব আলামত দেখেই সমর বিশারদরা আশংকা প্রকাশ করেছেন, চীন এ বছরই তাইওয়ান দখলে নেয়ার পাঁয়তারা চালাতে পারে। এ ব্যাপারে চীন ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রতি পাখির নজর রাখছে। এই যুদ্ধে রাশিয়ার সাফল্য-ব্যর্থতা তারা পর্যবেক্ষণ করছে। যুদ্ধে রাশিয়াকে তারা শুরু থেকে সবরকম মদত দিয়ে চলেছে। 

সারাবিশ্ব যখন রাশিয়ার ইউক্রেন দখল অভিযানের নিন্দায় সরব, চীন তখন রাশিয়াকে সরবে-নীরবে শক্তির যোগান দিয়ে চলেছে। ইউক্রেনের তুলনায় তাইওয়ানের অবস্থা অবশ্য আরও নাজুক। দেশটি জাতিসংঘ স্বীকৃত নয়। মাত্র ১৩টি দেশ তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ৫৯টি দেশের সংগে তাইওয়ানের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। চীনের বিরোধিতার কারণেই তাইওয়ান জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাচ্ছে না।
এই অবস্থায় গত ২৩ অক্টোবর সংবিধান সংশোধন করে শি জিন পিং তৃতীয়বারের মত চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন শি। তিনি ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈরিতা বাড়িয়ে তুলেছেন। অকারণে ভারতের সঙ্গে খণ্ড যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন, সিকিম-ভুটান সীমােন্তে উত্তেজনা জিইয়ে রেখেছেন এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ দ্বীপের দখল নিয়ে ক্রমাগত জাপানকে হুমকি দিয়ে চলেছেন। দুর্দান্ত প্রতাপশালী নেতা অবশ্য নিজ দেশে নিদারুন অস্বস্তিতে পড়েছেন।

অতি সম্প্রতি চীনা জনগণ প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে। এটা ভাবতেও অবাক লাগে, যে দেশে সামান্য প্রতিবাদও বরদাশত করা হয় না, সেখানে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। তবে কি চীনের জনগণ ৩৩ বছর আগের তিয়েন আনমেন স্কোয়ার হত্যাকাণ্ডের কথা ভুলে গেছে। ১৯৮৯ সালের অক্টোবরে গণতন্ত্র ও উদারীকরণের দাবিতে লাখ লাখ লোক সমবেত হয়েছিল তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে। এই আন্দেলনের নেতৃত্বে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। আন্দেলনের পরিসমাপ্তি ঘটানো হয়েছিল নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। শত শত লোকের নির্মম রক্তস্নাত মৃত্যু ঘটেছিল। কারফিউ দিয়ে তাদের লাশ গুম করা হয়। পরদিন সেনাবাহিনীকে হোস পাইপ দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করতে দেখা য়ায়।

এবারের আন্দেলনের প্রেক্ষিত ও স্থান অবশ্য ভিন্ন। বলা যায় দেশজুড়ে এ বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। তাই এই বিক্ষোভ দমনের আগে ভাবতে হচ্ছে চীনের কমিউনিষ্ট পার্টি নেতৃবৃন্দকে। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া এই বিক্ষোভ তিয়েন আনমেন স্কোয়ারের দেখানো পথে দমন করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)র দূর্গ বলে পরিচিত বেইজিং থেকে উইঘুরদের মানবাধিকার লুণ্ঠনের জন্য পরিচিত জিনজিয়াং পর্যন্ত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বিস্তৃত হচ্ছে। ২৫ থেকে ২৬ নভেম্বর সাধারণ মানুষ সোচ্চার হয়েছিলেন চীনা প্রেসিডেন্টের ইস্তফার দাবিতে। কারণ কঠোর লকডাউন আর শূন্য-কোভিড নীতি দেশকে করোনা মুক্ত করার সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং বাড়িয়ে তুলেছে জনদুর্ভোগ।

২৭ নভেম্বর, বেইজিং এবং নানজিং-এর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর কেঁপে ওঠে কোভিড লকডাউনের বিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এবং চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে। সাংহাইয়ে বিক্ষোভকারীদের প্রকাশ্যে শি জিনপিং পদত্যাগ কর এবং কমিউনিস্ট পার্টির পদত্যাগ চাই-এর মতো স্লোগান দিতে শোনা গেছে। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যেই প্রকাশ্যে বিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে সাংহাই।

অভূতপূর্ব এই লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ এখন শির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২৫ নভেম্বর রাতে জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে জনতা রাস্তায় নেমে এসে দাবি তোলে- লকডাউন তুলে নেও। এসময় স্থানীয়দের শ্লোগান দিতে শোনা গেছে ‘ওঠো, যারা দাস হতে চাও না, তারা চিৎকার করে বলো লকডাউন থেকে মুক্তি চাই’।

গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ২৬ নভেম্বর বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের মিছিল থেকে দাবি তোলা হয়েছে, ‘লকডাউন তুলে নেও’। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে লকডাউন চলে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের উত্তর-পশ্চিমের শিণচিয়াং উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চলের রাজধানী উরুমকিতে। এখানকার ৪০ লাখ বাসিন্দার অনেককে ১০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ঘরবন্দি রাখা হয়েছিল। জনগণের ক্ষোভের তাত্ক্ষণিক স্ফুলিঙ্গের কারণ হয়ে ওঠে জিনজিয়াংয়ের একটি উঁচু ভবনের অগ্নিকাণ্ড। ২৪ নভেম্বর রাতের ওই ঘটনায় ১০ জন নিহত হন। কোভিড বিধিনিষেধের কারণেই বাসিন্দারা আগুনের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে পারেননি। দমকল পৌঁছাতেও দেরি হয়। উরুমকিতে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা ২৬ নভেম্বর একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে দুর্ঘটনার সঙ্গে সরকারি বিধিনিষেধের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ সরকারী সাফাই মানতে নারাজ। সামাজিক গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ক্লিপগুলিতে দেখা যায়, কোভিড ব্যারিকেডের জন্য দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

হংকং-ভিত্তিক দক্ষিণ চীন মর্নিং পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিংয়েও উরুমকির আগুনের আওয়াজ শোনা গেছে। বেইজিংয়ের বাসিন্দা শন লিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে উরুমকির অগ্নিকাণ্ডে গোটা দেশ বিচলিত। ২৭ নভেম্বর চীনের বিভিন্ন শহরে সিপিসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হিসাবে সাদা ব্যানার প্রদর্শন করা হয়। তারা উরুমকির আগুনে নিহতদের মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

বেইজিংয়ের মর্যাদাপূর্ণ সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নানজিং-এর কমিউনিকেশন ইউনিভার্সিটির ছাত্ররাও উরুমকি অগ্নিকাণ্ডের শিকারদের জন্য বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সামাজিক গণমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে বেইজিংয়ের বাসিন্দারা কর্মকর্তাদের সাথে তর্ক করছেন। প্রতিবাদীরা সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘এই ধরনের অগ্নিকাণ্ডের শিকার আমরাও হতে পারি’। চীনে কঠোর শূন্য- কোভিড নীতির কারণে অমানবিক দুর্ভোগ অবশ্য এটাই প্রথম নয়। গত ৫ সেপ্টেম্বর ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত সিচুয়ান প্রদেশের বাসিন্দাদেরও পুলিশ এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপদ এলাকায় যেতে বাধা দেয়। ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষদের পাশাপাশি উদ্ধারকর্মীদেরও বাধ্য করা হয় প্রতিদিন কোভিড পরীক্ষায়।

হেনান প্রদেশের ঝেংঝো থেকে আরেকটি ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে ২৩ নভেম্বর ফক্সকন টেকনোলজি গ্রুপ পরিচালিত আইফোন কারখানার কম্পাউন্ডে সাদা প্রতিরক্ষামূলক পোশাকে নিরাপত্তা কর্মীদের মুখোমুখি হওয়া বিক্ষোভকারীদের একটি বিশাল ভিড় দেখা গেছে। আইফোন কারখানায় নিয়োজিত শত শত কর্মী কঠোর লকডাউন ব্যবস্থা থেকে বাঁচতে তাদের দেশের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকে বাধ্য হচ্ছেন বহু পথ হেঁটে বাড়ি ফিরতে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস নিউজ সার্ভিস বেইজিংয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক উ কিয়াংকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘ফক্সকনে আমরা যা দেখছি তা হল চীনা মডেলের দেউলিয়াপনা। এটি একটি উৎপাদন শক্তি হিসাবে চীনের ভাবমূর্তিতে ফাটল ধরাচ্ছে। সেইসাথে বিশ্বায়নে চীনা সম্পর্কের পতন ধটছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু বহুজাতিক কোম্পানি ইতিমধ্যেই চীনের বাইরে চলে যেতে চাইছে। চীনে গত দুই সপ্তাহ ধরে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবাধ্যতার প্রকাশ্য প্রদর্শন আসলে লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন এবং গণ-পরীক্ষার সাথে মানুষের হতাশার বহিঃপ্রকাশ।
শূন্য-কোভিড নীতি মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে স্থবির করে দিয়েছে। অথচ দেশের বিভিন্ন অংশে কোভিড প্রাদুর্ভাবের পাশাপাশি বিক্ষোভের খবর সিসিপির কর্মকর্তারা গোপন রাখতে ব্যস্ত। কঠোর শূন্য-কোভিড নীতি, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং রাজধানী বেইজিংসহ বেশ কয়েকটি শহরকে পর্যায়ক্রমিক লকডাউনের অধীনে রাখা হলেও, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে চীনে কোভিড -১৯ সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত ২৫ নভেম্বর এক খবরে জানা যায়, নতুন করে কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র স্থাপন করায় বেইজিংয়ে ফের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সুপারমার্কেট থেকে শুরু করে খোলা বাজারে খাদ্য সামগ্রীর সঙ্কট শুরু হয়েছে। সেই সংগে বেশিরভাগ বাসিন্দার বাইরে বের হওয়ার ওপর জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

বেইজিংয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের সংবাদদাতা থমাস হেল বিক্ষোভকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, অর্থনীতির ধীরগতির কারণে ব্যাপক রাজনৈতিক হতাশা প্রতিফলিত হচ্ছে। গত তিন বছর ধরে চীনের জনগণের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিসহ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২২ সালের শেষার্ধে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সামগ্রিক বৃদ্ধির হার তিন শতাংশের বেশি নাও হতে পারে। ২০২২ সালের অক্টোবরে চীনে বাণিজ্য সংকুচিত হয়েছে। কারণ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা ভোক্তাদের খরচের সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির সামগ্রিক দুর্বলতার প্রভাবে রপ্তানি এবং আমদানিও কমেছে।

২৬ নভেম্বর এক বৈঠকে বেইজিংয়ে সিসিপির সম্পাদক ইয়িন লি কর্মকর্তাদের কোভিড নিয়ন্ত্রনে আরও কঠোর নীতি প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে চীনের সাধারণ মানুষ সেই নির্দেশ মানতে নারাজ। অস্থায়ী হাসপাতালের নামে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ কিছুতেই মেনে নিতে নারাজ সাধারণ মানুষ।

অপরদিকে সামগ্রিক দুর্ভোগের বিপরীতে চীনে কোভিড-১৯ এর ভয় কমে গেছে। সাধারণ মানুষ তাদের পরিচিতদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে শিখেছেন, কোভিডের লক্ষণগুলি পরিচালনাযোগ্য। তারা কোয়েরান্টাইন বা অস্বাস্থ্যকর অস্থায়ী কেন্দ্রে থাকাটাকেই বেশি ভয় পাচ্ছেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে বেইজিংয়ের এক অফিস কর্মী তাই বলেন, ‘আমি হাসপাতালে থাকার চেয়ে কয়েকদিন বাড়িতে জ্বর নিয়েই থাকতে চাই। সেখানকার অব্যবস্থা বা টয়লেটের কথা ভাবলেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি’। একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে চীনের সাধারণ মানুষের গলাতেও। আর সেটাই সমবেতভাবে ধ্বণিত হচ্ছে শি বিরোধী স্লোগানে।

এখন দেখার বিষয় চীন সরকার জনগণের এই নেতিবাচক মনোভাব এবং প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠা কিভাবে সামাল দেন। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় কমিউনিষ্ট পার্টি শি বিরোধী বিক্ষোভ দমনে তার চিরায়ত কৌশলটিই অবলম্বন করবে। তবে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তৃত মানুষের ক্ষোভ-দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান ঘটানো সহজসাধ্য নয়। চীনা জনগণ বন্দুকের নলের মুখে সম্ভাব্য মৃত্যুর কথা মাথায় রেখেই প্রতিবাদমুখর হয়েছে। এর বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ চালালে বিক্ষোভ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আপাত:দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে চীন পরিস্থিতিজনিত এই বিক্ষোভ দমনে ধীরে চলো নীতি অনুস্মরণ করছে। তবে কঠোর সেন্সরশীপের কারণে চীনের অভ্যন্তরীন বিষয়গুলো কখনও সঠিকভাবে জানা যা না। যেটুকু তারা প্রকাশ করে কেবল সেটুকুই বাকি বিশ্ব জানতে পারে। তারপরও স্যাটেলাইলাইটের যুগে চাইলেই অনেক কিছুই গোপন রাখা যায় না। এখন পর্যন্ত যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে চীনের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভীত নড়বড়ে হয়েছে।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর