শিরোনাম
প্রকাশ: ০৯:৩০, বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪

ওলটপালট করে দে মা লুটেপুটে খাই

সৈয়দ বোরহান কবীর
অনলাইন ভার্সন
ওলটপালট করে দে মা লুটেপুটে খাই

ঘটনাটি ২০১২ সালের। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সেই সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত)। এক সকালে তাকে ফোন করলেন সিরাজগঞ্জ থেকে নির্বাচিত তরুণ এমপি। বললেন, ‘চাচা, একজনকে নিয়ে আপনার কাছে আসতে চাই।’ মো. সাহাবুদ্দিন সময় দিলেন। পরদিন ওই তরুণ সংসদ সদস্য আরেকজন সংসদ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে এলেন দুদক অফিসে। তার নাম জুনাইদ আহমেদ পলক। পরিচয় পর্বের পর পলক আর সময় নিলেন না।  দ্রুত উঠে গিয়ে মো. সাহাবুদ্দিনের পা ধরে বসলেন। সঙ্গে শুরু হলো কান্নাকাটি। দুদক কমিশনার ঘটনার আকস্মিকতায় কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তাকে টেনে উঠালেন। জানতে চাইলেন, কী সমস্যা। পলক এলাকায় একটি দুর্নীতির ঘটনায় জড়িয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে। এই তদন্ত অব্যাহত থাকলে তিনি দোষী প্রমাণিত হবেন। শেষ হয়ে যাবে পলকের রাজনীতি। হাত জোড় করে সাহায্য চাইলেন। মো. সাহাবুদ্দিন এমনিতেই পরোপকারী মানুষ। দয়াবানও বটে। ছেলেটির প্রতি তার মায়া হলো। তদন্ত কর্মকর্তাকে ফোন করলেন। খুব দ্রুতই ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে পলককে বাঁচিয়ে দিলেন। তখন যদি পলকের দুর্নীতির দায়ে বিচার হতো তাহলে আজ সে দুর্নীতির ‘ডন’ হতে পারত না। কচু কাটতে কাটতে যেমন মানুষ ডাকাত হয়, তেমনি ছোট চুরি করে ধরা খাওয়া পলক হয়ে উঠেছিল মহাদুর্নীতিবাজ। কদিন আগে বঙ্গভবনে হতাশা, ক্ষোভ এবং অনুতাপ নিয়ে আমাকে এই কথাগুলো বলছিলেন রাষ্ট্রপতি। হতাশার কালো মেঘে ঢাকা ছিল তার মুখ। শেষে খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বললেন, পলককে এই কথাটা বলবেন। এদের জন্যই আওয়ামী লীগের এই সর্বনাশ। পলককে রাষ্ট্রপতির সেদিনের কথাটা বলা হয়নি। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। বিদেশে পালিয়ে যেতে গিয়ে ধরা পড়েন পলক। অপমানজনকভাবে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এটি যেন অনিবার্য ছিল। সবাই জানত মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি সরকারের বারোটা বাজাচ্ছে। দেশের সর্বনাশ করছে। এরা পরিণত হয়েছিল গণশত্রুতে। এদের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণা আক্রোশে রূপ নিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতারাও নিজেদের মধ্যে আলাপ-চারিতার মহাবিপর্যয়ের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন থাকতেন। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত, লুটেরা, চাটুকারের জন্য যে আওয়ামী লীগ সর্বনাশের পথে এটা কারোরই অজানা ছিল না। ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ২২ পরিবারের লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল ২২০০ পরিবারের লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে। গত ১৫ বছর দেশটা জনগণের ছিল না। আওয়ামী লীগেরও ছিল না। দেশটা দখল করেছিল কিছু লুটেরা দৈত্য। এদের লুটেরা দৈত্যদের কথা সবাই জানত। কিন্তু কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। দেশে চলছিল লুটতন্ত্র। এ যেন লুটের উৎসব। ওলটপালট করে দে মা লুটেপুটে খাই- এই নীতিতে চলছিল বাংলাদেশ।

আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয় ধানমন্ডি তিন নম্বরে। যেখানে বেকার, পদহীন নেতারা দিনভর আড্ডা দিতেন। রাজা-উজির মারতেন। কোন মন্ত্রী, এমপি, নেতা কত টাকা বানিয়েছে তার আদ্যোপান্ত শোনা যেত এখানেই। একদিন টেলিভিশনে খবর হচ্ছিল। খবরে সালমান এফ রহমানকে দেখে তরুণ এক নেতা চিৎকার করে বললেন, ‘দরবেশেরে দেখলেই আওয়ামী লীগের এক লাখ ভোট কমে।’ মুহূর্তেই এই কথা চলে গেল সরকারের কর্তাদের কাছে। গণভবনে নিষিদ্ধ হলেন ওই তরুণ নেতা। মনোনয়ন তো দূরের কথা, কোনো কমিটিতেও রাখা হলো না তাকে। তাকে দেখলেই আওয়ামী লীগের নেতারা এমনভাবে তাকাতেন যেন তিনি খুনি কিংবা ডাকাত। একদিন চা পান করতে করতে তার দুঃখের গল্প বলছিলেন আমাকে। সালমান হয়ে উঠেছিলেন সরকারের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি। অনেকেই তাকে ‘উপ-প্রধানমন্ত্রী’ বলতেন। কে মন্ত্রী হবে, কে সচিব হিসেবে কোন মন্ত্রণালয় পাবে তা সিদ্ধান্ত নিতেন সালমান। একজন সাবেক মন্ত্রীর গল্প বলি। তিনি ভালো আইনজীবী। ২০১৮ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান। সেবার তো আর দেশে ভোট হয়নি। আওয়ামী লীগের টিকিট পাওয়া মানেই এমপি। আইনজীবীর ভাগ্য সুপ্রসন্ন প্রথমবার এমপি হয়েই মন্ত্রী হলেন। পেলেন এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। কদিন বাদেই সেই মন্ত্রণালয়ে সালমানের হানা। একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের জন্য তদ্বির করতে এলেন। কিন্তু আইনবহির্ভূত, এ কারণে সালমানের তদ্বির শুনলেন না ওই মন্ত্রী। মন্ত্রী নিজে বিষয়টি নিয়ে গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বললেন। কদিন পরই বেচারা বুঝতে পারলেন কোন দানবের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছেন। সরকারি সফরে দুবাই গেছেন ওই মন্ত্রী। সেখানেই জানলেন, তাকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সালমান প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, তার কথা না শুনলে কী হয়। এ যেন ‘জাওয়ান’ সিনেমার ব্যবসায়ী ‘কালির’ বাংলাদেশ সংস্করণ। যেখানে সরকার পুতুল মাত্র। রাষ্ট্র চালায় ‘কালি’। বাংলাদেশ যেন চালাতেন সালমান। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাংক-বিমা, প্রশাসন-মন্ত্রী সবকিছু প্রকাশ্যে নিয়ন্ত্রণ করতেন এই ঋণ খেলাপি মাফিয়া। সরকারের কাজ ছিল শুধু লুটেপুটে খাওয়ার ব্যবস্থা করা।

সালমান একা নন, ছোট-বড় নানা লুটেরা সিন্ডিকেট চেটেপুটে খেয়েছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সেক্টরের কথাই ধরা যাক। সেখানে একজন প্রতিমন্ত্রী যেন অনন্তকালের জন্য লুটপাটের লাইসেন্স পান। তিনি গর্ব করে ব্যবসায়ীদের বলতেন ‘সিআরআই (আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং) চালাই। অনেক খরচ।’ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এক ডাক সাইটে সচিবকে। পরে তিনি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক আমলা হয়েছিলেন। বিদ্যুতের দায়িত্ব দেওয়ার পর শেখ হাসিনা ওই সচিবকে ডেকে পাঠান। বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী চোর। কাজেই সাবধান। সব ফাইল আমাকে দেখাবে।’ ওই সচিব না হলেও এক শ জনকে কথাটি বলেছিলেন। তাতে ওই প্রতিমন্ত্রীর দুর্নীতি এতটুকু কমেনি, বরং বেড়েছে। ২০১৬ সালের ঘটনা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে হঠাৎ দৌড়ঝাঁপ বেড়ে গেল। একজন প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিশ্চিত করলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। কারণ সীমাহীন দুর্নীতি। কিন্তু বিকাল নাগাদ উত্তেজনা থিতিয়ে পড়ল। পদত্যাগ নাটকের সমাপ্তি ঘটল। পরদিন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে দেখা গেল সিআরআইয়ের একটি অনুষ্ঠানে। মুচকি হেসে ঘনিষ্ঠদের বলেছিলেন ‘আমাকে সরানো এত সহজ?’ এই প্রতিমন্ত্রী ময়মনসিংহ এলাকায় আস্ত একটি গ্রাম কিনেছেন। কেরানীগঞ্জে তার অনুমতি ছাড়া কোনো জমির রেজিস্ট্রি হতো না। এগুলো ওপেন সিক্রেট। সবাই জানে। দুবাইয়ে আপনি যদি কোনো বাঙালি চালকের ক্যাবে ওঠেন, তাহলে দর্শনীয় স্থান দেখানোর মতো করে তিনি আপনাকে ওই সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ আমলে ফুলেফেঁপে ওঠা বিত্তবানদের সম্পদ দেখাবে।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের দুর্নীতির ফিরিস্তি দিয়েছিলেন স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তিনি বলেন, ‘তুমি কী ছিলে এখন কী হয়েছ জানি না। কত টাকার মালিক হয়েছ তুমি? কত টাকা দুর্নীতি করেছ সব জানি।’ বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সব নেতা ধরেই নিয়েছিলেন ড. হাছান মাহমুদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ। কিন্তু কীসের কী, দুর্নীতিবাজের স্বীকৃতি পাওয়ার পর তার ক্যারিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। ড. হাছান ২০১৮ সালে তথ্যমন্ত্রী হলেন, ২০২৪ সালে হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ যেন অর্ধেক রাজ্য আর রাজকন্যা পাওয়ার মতো। দুর্নীতিবাজ হওয়ার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।

শাহরিয়ার আলম বিএনপিতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। এজন্য রাজশাহীতে বিএনপির জনপ্রিয় নেতা মিজানুর রহমান মিনুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মিনু একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ। তিনি শাহরিয়ারকে বোঝালেন। বললেন, ব্যবসা করছ সেটাই ভালো। ব্যবসা করেও দেশের জন্য অবদান রাখা যায়। তাকে ফিরিয়ে দিলেন। ওমা! কদিন পর শাহরিয়ার আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়ে যেন পেলেন আলাদিনের চেরাগ। কথায় কথায় সজীব ওয়াজেদ জয় আর ববির নাম ভাঙাতেন। একইভাবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তাঁর পরিবারের নাম ভাঙিয়ে স্বাস্থ্য খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন জাহিদ মালেক। জাহিদ মালেকের বাবা ছিলেন স্বৈরাচার এরশাদের দোসর। ২০১৪ সালে তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি হন পূর্ণমন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিণত হয় দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে। সব ফাইল তিনি বাড়িতে নিয়ে যেতেন। তার ছেলে রাহাত মালিক কেনাকাটার টেন্ডারে সিদ্ধান্ত দিতেন। সাবেক মন্ত্রীর বারিধারার বাসা ছিল স্বাস্থ্যের ঠিকাদারদের সান্ধকালীন ঠিকানা। তার অবাধ লুণ্ঠনে কেউ বাধা দিলে তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করে দেওয়া হতো। বৈঠকে তিনি ফোনে দেখাতেন, গত রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কতক্ষণ কথা হয়েছে। জাহিদ মালেক যেমন শেখ হাসিনার নাম বিক্রি করে লুণ্ঠন করতেন, তেমনি সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী শেখ রেহানার নাম ভাঙাতেন কথায় কথায়। যে কোনো টেন্ডার বিল আটকে দিতেন। সরাসরি বলতেন, ‘টাকা দিয়ে মন্ত্রী হয়েছি ভাই।’

২০২৩ সালের ডিসেম্বরের কথা। আটকে যাওয়া বিল উদ্ধারে একজন ব্যবসায়ী গেলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দপ্তরে। মন্ত্রী হাসিখুশিভাবে তাকে চা পানে আপ্যায়িত করলেন। টাকা পয়সার বিষয়টিও ফয়সালা হয়ে গেল। কিন্তু বিলের ফাইলে মন্ত্রী স্বাক্ষর করলেন না। বললেন, নির্বাচনের পর এই চেয়ারে বসে প্রথম আপনার ফাইল স্বাক্ষর করব। ব্যবসায়ী খুশি হতে পারলেন না। তর্ক জুড়ে দিলেন। বললেন, মানছি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার জয়ী হবে। কিন্তু আপনি তো আর এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকবেন না। মন্ত্রী তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন, নিশ্চিত থাকুন, আমিই এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হচ্ছি। ব্যবসায়ী মন খারাপ করে ফিরে এলেন। এক রাশ অনিশ্চয়তা নিয়ে তিনি আমাকে তার হতাশার কথা বলছিলেন। কিন্তু কী আশ্চর্য ১১ জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় তাজুল ইসলামই হলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। মন্ত্রিসভায় চালু হয়েছিল কোটা পদ্ধতি। কে কার কোটায় মন্ত্রী সবাই জানতেন। কোটার বদৌলতে ‘ডিমেনশিয়ার রোগী’ লোটাস কামাল কোনো কাজ না করেই পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে থেকে গেলেন। এই সময় দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজলেও লোটাস কামাল ও তার স্ত্রী কন্যার সম্পদের স্ফীতি ঘটেছে বিপুলভাবে। এরকম বহু মন্ত্রীর উদাহরণ দেওয়া যায়। যারা দেশকে ওলটপালট করে লুটেপুটে খেয়েছে।

গত ১০ বছর ধরে এসব নিয়ে লিখছি। ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘এই চোর কোথা থেকে পয়দা হয়েছে জানি না’ শিরোনামে কলাম লিখেছিলাম। ২৭ মে লিখেছিলাম ‘সরকারের ঘরেই সর্বনাশের বসবাস’। ওই বছরের ১০ জুন লিখেছিলাম ‘নৌকা ডোবাতে মরিয়া কতিপয় মন্ত্রী এবং আমলা।’ ওই কলামের পর ক্ষমতাধরদের চাপে বাংলাদেশ প্রতিদিনে আমার কলাম বন্ধ হয়ে যায়। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে দুর্নীতিবাজদের দেওয়া হয় আশকারা। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে ষড়যন্ত্রকারী তকমা লাগিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়।

মন্ত্রী-এমপিরা যখন দুর্নীতির উৎসবে মত্ত তখন আমলারা দূরে থাকবেন কেন? কদিন আগে দেখলাম সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামালের মোহাম্মদপুরের বাসা যেন রীতিমতো টাকার গুদাম। এই সচিব যে ভয়াবহ দুর্নীতিবাজ সবাই জানতেন। এমনকি শেখ হাসিনাও জানতেন শাহ কামাল দুর্নীতিবাজ। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন শুরু করেন। শাহ কামাল তখন দুর্যোগের সচিব। মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে শেখ হাসিনা ভরা বৈঠকে সচিবের দুর্নীতি নিয়ে নাখোশ হলেন। বললেন ‘কোথায় কী করেন সব জানি। আমি কিন্তু হুটহাট করে এই মন্ত্রণালয়ে আসব। হাতে নাতে ধরব।’ সবাই ধরে নিল শাহ কামাল সম্ভবত আর এই মন্ত্রণালয়ে থাকছে না। কিন্তু কোথায় কী? বহাল তবিয়তে থেকে গেলেন। শাহ কামালের মতো যারা দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত তারাই পদোন্নতি পেয়েছেন। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। তারাই ছিলেন পতিত সরকারের আস্থাভাজন। এমনকি শেখ হাসিনার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়ে গেছে নিরাপদে। কত বেনজীর-মতিউরের জন্ম হয়েছে গত ১৫ বছরে কে জানে?

আমার বিবেচনায় এই অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বড় কাজ হলো রাষ্ট্রের ভিতর থাকা এই দুর্বৃত্ত চক্র এবং দুর্নীতিবাজদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা। এদের যদি চিহ্নিত না করা যায়, নির্মোহভাবে যদি এদের বিচার না হয় তাহলে এই বিপ্লব ব্যর্থ হতে বাধ্য। অতীতে সব সরকারই দুর্নীতিকে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। বিরোধী দলকে চাপে ফেলার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করেছে। এবারও কি তাই হবে? আমি লক্ষ্য করেছি, জুলাই বিপ্লবের পর নতুন সরকার হত্যার বিচারে যত মনোযোগী, দুর্নীতির ব্যাপারে ততটাই উদাসীন। এখন পর্যন্ত গত ১৫ বছরে লুণ্ঠনের জন্য কোনো কমিশন হয়নি। পুনর্গঠন করা হয়নি দুর্নীতি দমন কমিশন। বরং দুর্নীতি দমন কমিশন সেই পুরনো পথেই হাঁটছে। বিভিন্ন স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার নতুন নাটক মঞ্চস্থ করছে। এতে অতীতের মতো দুর্নীতিবাজরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। বছরের পর বছর চলবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ। দুর্নীতিবাজরা আবার সংগঠিত হবে। তাই বিপ্লবের ফসল ঘরে তুলতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিকল্প নেই। সেই যুদ্ধ করতে হবে সততার সঙ্গে।

আমি মনে করি, জুলাই হত্যাকান্ড এবং ১০ বছরের দুর্নীতি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত। কেন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এভাবে পৈশাচিক কায়দায় দমনের চেষ্টা করেছিল পতিত সরকার? কারণ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। জনগণের ক্ষোভ-দুঃখ-বেদনাগুলো সরকারের কাছে পৌঁছানোর সব দরজা ছিল বন্ধ। সরকার কেন জনবিচ্ছিন্ন হলো? কারণ গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার দেশ শাসন করেছিল কোনো বৈধ ম্যান্ডেট ছাড়া, ভোট ছাড়া। নানা কূটকৌশলে তারা ‘ক্ষমতা’-কে চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল। ক্ষমতায় আজীবন থাকার এই সর্বগ্রাসী মানসিকতাকে কেন আচ্ছন্ন হয়েছিল সাবেক সরকার? কারণ দুর্নীতি। দুর্নীতির জন্যই সরকার ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। দুর্নীতি ঢাকার জন্যই সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। অবাধে লুণ্ঠনের জন্যই সরকার একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্যই সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিল। দুর্নীতিই আসলে সরকারকে স্বৈরাচার করেছিল, করে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। দুর্নীতির কারণেই তারা রীতিমতো দানবে পরিণত হয়েছিল। আমরা যদি বিগত সরকার কাঠামোয় সবক্ষেত্রে ক্ষমতাবানদের পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব সবক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের রাজত্ব ও কর্তৃত্ব। দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করার এক রীতি চালু হয়েছিল দেশে। উদহারণ দিই, নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ করলেন। বেচারা চেয়ারম্যানও পদচ্যুত হলেন, দীপু মনি আবার মন্ত্রী হলেন। বিগত সরকারের কিচেন ক্যাবিনেট ছিল সেরা দুর্নীতিবাজদের সমন্বয়ে গড়া। সালমান ছিলেন দুর্নীতিবাজদের শিরোমণি। তিনি ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাবান। ওবায়দুল কাদের রেকর্ড তিনবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কীভাবে? দুর্নীতিতে পারদর্শী হওয়ার কারণে। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা একবার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে সরব হলেন। ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রীর দুর্নীতির ফিরিস্তি দিতে থাকলেন ফেসবুকে। বিপদ দেখে কাদের ছোট ভাইকে বাড়িতে ডেকেছিলেন। কত টাকায় শেষ পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের মুখ বন্ধ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তা অবশ্য জানা যায়নি। হ্যাটট্রিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত একজন বিশেষ সহকারী, যিনি শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয়ও বটে। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে। পরে শেখ হাসিনার কাছে অনাহূত হন ওই বিশেষ সহকারী। আইনমন্ত্রীর দুর্নীতি এবং প্রেম প্রণয়ের গল্প নিয়ে হাসি ঠাট্টা হতো সর্বত্র। তারপরও শেখ হাসিনার কাছে আনিসুল হক ছিলেন একান্ত প্রিয়জন। শুধু মন্ত্রী নয় প্রশাসনেও শীর্ষ এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো ছিল চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের দখলে। ব্যাংকপাড়ায় সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বলা হতো এস আলমের ‘ক্রীতদাস’। পুলিশ, বিচার বিভাগ কোথায় ছিল না দুর্নীতিবাজদের দাপট। দুর্নীতিবাজদের হাতেই যেন সমর্পিত হয়েছিল বাংলাদেশ। শেখ সাদী লিখেছিলেন-‘এমন একদিন আসবে যেদিন মূর্খরা উদ্ভট আদেশ জারি করবে। নির্বোধরা তাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য গর্ব অনুভব করবে, পন্ডিতরা তাদের পান্ডিত্যের জন্য অনুশোচনা বোধ করবেন। দুর্নীতিপরায়ণরা তাদের দুর্নীতির জন্য উল্লাসে নৃত্য করবে।’ বাংলাদেশে সেই সময় এসেছিল। যার বিরুদ্ধে আসলে এই বিদ্রোহ এবং বিপ্লব। তাই বিপ্লবের ফসল সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হলে দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। লুটেরা দৈত্যদের বোতলে বন্দি করতে হবে। না হলে এই দুর্বৃত্তরা প্রতি বিপ্লব ঘটাবে। দুর্নীতির নিরপেক্ষ এবং দ্রুত বিচার না হলে আবার জন্ম নেবে নতুন দুর্নীতির রাক্ষস।

 
লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

এই বিভাগের আরও খবর
শেখ হাসিনার পোর্ট্রেটে ফ্যাসিবাদের কালিমা
শেখ হাসিনার পোর্ট্রেটে ফ্যাসিবাদের কালিমা
বন্দর চুক্তি : জোরজবরদস্তি চুক্তি করছে সরকার
বন্দর চুক্তি : জোরজবরদস্তি চুক্তি করছে সরকার
জলবায়ু সহনশীল কৃষি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য
জলবায়ু সহনশীল কৃষি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য
ঐক্যেই উত্থান, অনৈক্যে পতন
ঐক্যেই উত্থান, অনৈক্যে পতন
সোভিয়েত যুগের মতো রাশিয়া আবারও বিশ্বে প্রভাববলয় গড়ে তুলছে
সোভিয়েত যুগের মতো রাশিয়া আবারও বিশ্বে প্রভাববলয় গড়ে তুলছে
সুষ্ঠু নির্বাচনে সেনাবাহিনীই ভরসা
সুষ্ঠু নির্বাচনে সেনাবাহিনীই ভরসা
নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের অবসান
নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের অবসান
নিষিদ্ধ গন্ধম ও বাংলাদেশের রাজনীতি
নিষিদ্ধ গন্ধম ও বাংলাদেশের রাজনীতি
প্রকৃতির সঙ্গে কী সম্পর্ক চাই
প্রকৃতির সঙ্গে কী সম্পর্ক চাই
বিদেশপন্থি রাজনীতির বিপদ
বিদেশপন্থি রাজনীতির বিপদ
নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রাপথে বেশ কিছু সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ
নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রাপথে বেশ কিছু সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ
তেলাপিয়া: সাশ্রয়ী মূল্যের ‘জলজ মুরগি’, বাংলাদেশের পুকুরে সাফল্যের তরঙ্গ
তেলাপিয়া: সাশ্রয়ী মূল্যের ‘জলজ মুরগি’, বাংলাদেশের পুকুরে সাফল্যের তরঙ্গ
সর্বশেষ খবর
ল্যুভরে বসছে আরও ১০০ ক্যামেরা
ল্যুভরে বসছে আরও ১০০ ক্যামেরা

৮ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রোজ গার্ডেন কিনে ক্ষতি ৩৩২ কোটি, অনুসন্ধানে দুদক
রোজ গার্ডেন কিনে ক্ষতি ৩৩২ কোটি, অনুসন্ধানে দুদক

৫৫ মিনিট আগে | জাতীয়

টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ
টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ

১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ

১ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত
ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত

২ ঘণ্টা আগে | ইসলামী জীবন

রাবিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত
রাবিতে দুর্বৃত্তদের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত

২ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করবে জাপান
বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করবে জাপান

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বিপিএল নিলামের নতুন তারিখ ঘোষণা
বিপিএল নিলামের নতুন তারিখ ঘোষণা

৩ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

তেল অনুসন্ধানে কৃত্রিম দ্বীপ বানাচ্ছে পাকিস্তান
তেল অনুসন্ধানে কৃত্রিম দ্বীপ বানাচ্ছে পাকিস্তান

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নাইজেরিয়ায় গির্জায় গুলিতে নিহত ২
নাইজেরিয়ায় গির্জায় গুলিতে নিহত ২

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দিল্লি বিস্ফোরণ: ধরপাকড়-হয়রানির শিকার সাধারণ কাশ্মীরিরা
দিল্লি বিস্ফোরণ: ধরপাকড়-হয়রানির শিকার সাধারণ কাশ্মীরিরা

৪ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

ইন্দোনেশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, সর্বোচ্চ সতর্কতা
ইন্দোনেশিয়ায় জেগে উঠল আগ্নেয়গিরি, সর্বোচ্চ সতর্কতা

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ডে ১০০ ঘর ভস্মীভূত
গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ডে ১০০ ঘর ভস্মীভূত

৫ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

৭ বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা ৮ দলের
৭ বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা ৮ দলের

৫ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

কেরানীগঞ্জে কিশোর গ্যাং লিডার আকাশ মোল্লা গ্রেফতার
কেরানীগঞ্জে কিশোর গ্যাং লিডার আকাশ মোল্লা গ্রেফতার

৫ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার যুবকের আত্মহত্যা
প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার যুবকের আত্মহত্যা

৫ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে
বন্দর বিদেশিদের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে

৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কলাপাড়ায় নবান্ন উৎসব
কলাপাড়ায় নবান্ন উৎসব

৫ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

বরিশালে মোটরসাইকেল রক্ষা করতে গিয়ে উল্টে গেল বাস
বরিশালে মোটরসাইকেল রক্ষা করতে গিয়ে উল্টে গেল বাস

৫ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

৩১ দফা জনগণকে ধানের শীষে ভোট দিতে আকৃষ্ট করবে: বাবুল
৩১ দফা জনগণকে ধানের শীষে ভোট দিতে আকৃষ্ট করবে: বাবুল

৫ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ভারতের কাছে হারালো বাংলাদেশ
ভারতের কাছে হারালো বাংলাদেশ

৫ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

রূপায়ন আর্মড ফোর্সেস ডে কাপ গলফ টুর্নামেন্ট শুরু
রূপায়ন আর্মড ফোর্সেস ডে কাপ গলফ টুর্নামেন্ট শুরু

৬ ঘণ্টা আগে | কর্পোরেট কর্নার

স্বর্ণের দাম বেড়েছে
স্বর্ণের দাম বেড়েছে

৬ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ভোট চেয়ে পথসভা ও গণসংযোগ
বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ভোট চেয়ে পথসভা ও গণসংযোগ

৬ ঘণ্টা আগে | ভোটের হাওয়া

টি-টেনে দলকে জেতাতে ব্যর্থ সাইফ
টি-টেনে দলকে জেতাতে ব্যর্থ সাইফ

৬ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

মুন্সীগঞ্জে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলায় আটক ১০
মুন্সীগঞ্জে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলায় আটক ১০

৬ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

দিনাজপুরে ফারিয়ার মানববন্ধন
দিনাজপুরে ফারিয়ার মানববন্ধন

৬ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

ওয়েস্টিনে অ্যারাবিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যাল শুরু
ওয়েস্টিনে অ্যারাবিয়ান ফুড ফেস্টিভ্যাল শুরু

৬ ঘণ্টা আগে | কর্পোরেট কর্নার

গাইান্ধায় আইএলএসটি শিক্ষার্থীদের টেবিল-চেয়ারে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ
গাইান্ধায় আইএলএসটি শিক্ষার্থীদের টেবিল-চেয়ারে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ

৬ ঘণ্টা আগে | ক্যাম্পাস

মুন্সীগঞ্জে ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল নারীর
মুন্সীগঞ্জে ট্রাক চাপায় প্রাণ গেল নারীর

৬ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সর্বাধিক পঠিত
শেখ হাসিনাকে কেন ফেরত দেবে না ভারত, আল–জাজিরার বিশ্লেষণ
শেখ হাসিনাকে কেন ফেরত দেবে না ভারত, আল–জাজিরার বিশ্লেষণ

১৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দেশজুড়ে মোবাইল ফোন বিক্রির সব দোকান বন্ধের ঘোষণা
দেশজুড়ে মোবাইল ফোন বিক্রির সব দোকান বন্ধের ঘোষণা

১৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

লাশ পোড়ানোর মামলায় ক্ষমা চেয়ে জবানবন্দি দিলেন রাজসাক্ষী আবজালুল
লাশ পোড়ানোর মামলায় ক্ষমা চেয়ে জবানবন্দি দিলেন রাজসাক্ষী আবজালুল

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে সচিবদের সঙ্গে বসছে কমিশন
নতুন বেতন কাঠামোর রূপরেখা নিয়ে সচিবদের সঙ্গে বসছে কমিশন

১০ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ঘরে বসেই করা যাবে মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ
ঘরে বসেই করা যাবে মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ

১৭ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

ভারতের বিরুদ্ধে জয় প্রতিটি বাংলাদেশিকে গর্বিত করেছে: প্রধান উপদেষ্টা
ভারতের বিরুদ্ধে জয় প্রতিটি বাংলাদেশিকে গর্বিত করেছে: প্রধান উপদেষ্টা

১৪ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কারাগারে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ
কারাগারে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ মাসুদ

৮ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

পেনাল্টি মিসে জয় হাতছাড়া ব্রাজিলের
পেনাল্টি মিসে জয় হাতছাড়া ব্রাজিলের

১৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

যুক্তরাষ্ট্রে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা সৌদি যুবরাজের
যুক্তরাষ্ট্রে ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা সৌদি যুবরাজের

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

বিশ্বকাপের এক গ্রুপে রাখা হলো না ভারত-পাকিস্তানকে
বিশ্বকাপের এক গ্রুপে রাখা হলো না ভারত-পাকিস্তানকে

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ট্রুডো–কেটি পেরি'র প্রেম নিয়ে সাবেক স্ত্রী সোফির খোলামেলা মন্তব্য
ট্রুডো–কেটি পেরি'র প্রেম নিয়ে সাবেক স্ত্রী সোফির খোলামেলা মন্তব্য

২১ ঘণ্টা আগে | শোবিজ

শেখ হাসিনার পোর্ট্রেটে ফ্যাসিবাদের কালিমা
শেখ হাসিনার পোর্ট্রেটে ফ্যাসিবাদের কালিমা

১৭ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

শততম টেস্টে সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে মুশফিক, বাড়ল অপেক্ষা
শততম টেস্টে সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে মুশফিক, বাড়ল অপেক্ষা

১১ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

পল্লবীতে যুবদল নেতা হত্যা, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
পল্লবীতে যুবদল নেতা হত্যা, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেফতার

১৩ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

নতুন বছরের পাঠ্যবই সরবরাহ শুরু করেছে এনসিটিবি
নতুন বছরের পাঠ্যবই সরবরাহ শুরু করেছে এনসিটিবি

১৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মধ্যরাতে বাসা থেকে সাংবাদিককে তুলে নিল গোয়েন্দা পুলিশ
মধ্যরাতে বাসা থেকে সাংবাদিককে তুলে নিল গোয়েন্দা পুলিশ

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে : রুমিন ফারহানা
শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছে : রুমিন ফারহানা

১৪ ঘণ্টা আগে | টক শো

সামরিক হস্তক্ষেপ চালালে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে, মাদুরোর হুঁশিয়ারি
সামরিক হস্তক্ষেপ চালালে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে, মাদুরোর হুঁশিয়ারি

১৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দেশে থেকেই কার্ড দিয়ে বিদেশি রুটের বিমানের টিকিট কেনা যাবে
দেশে থেকেই কার্ড দিয়ে বিদেশি রুটের বিমানের টিকিট কেনা যাবে

৮ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

দেশে ফিরলেন আলী রীয়াজ
দেশে ফিরলেন আলী রীয়াজ

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মুশফিকের মাইলফলক ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
মুশফিকের মাইলফলক ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

১৮ ঘণ্টা আগে | মাঠে ময়দানে

প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু, জানুন কোন দেশে কখন
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু, জানুন কোন দেশে কখন

১৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

কারচুপির অভিযোগ এনে মিস ইউনিভার্স ছাড়লেন দুই বিচারক
কারচুপির অভিযোগ এনে মিস ইউনিভার্স ছাড়লেন দুই বিচারক

৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জাপানে ১৭০ ভবনে অগ্নিকাণ্ড
জাপানে ১৭০ ভবনে অগ্নিকাণ্ড

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দিল্লি বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা কী বলছে
দিল্লি বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা কী বলছে

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

একজন নয়, প্রতি ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন সেনাসদস্য চায় জামায়াত
একজন নয়, প্রতি ভোটকেন্দ্রে পাঁচজন সেনাসদস্য চায় জামায়াত

১২ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

অজিত দোভালকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালেন খলিলুর রহমান
অজিত দোভালকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালেন খলিলুর রহমান

৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আগামীকাল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আগামীকাল

৬ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের পাশের মার্কেটে আগুন
গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের পাশের মার্কেটে আগুন

১৮ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

নির্বাচনে মিজানুর রহমান আজহারীর প্রার্থী হওয়ার খবর সঠিক নয় : জামায়াত
নির্বাচনে মিজানুর রহমান আজহারীর প্রার্থী হওয়ার খবর সঠিক নয় : জামায়াত

৭ ঘণ্টা আগে | রাজনীতি

প্রিন্ট সর্বাধিক
রিভিউ হচ্ছে প্রার্থী তালিকা
রিভিউ হচ্ছে প্রার্থী তালিকা

প্রথম পৃষ্ঠা

ইতালি যাওয়ার পথে গুলি করে হত্যা তিনজনকে
ইতালি যাওয়ার পথে গুলি করে হত্যা তিনজনকে

পেছনের পৃষ্ঠা

আস্থার বাতিঘর তারেক রহমান
আস্থার বাতিঘর তারেক রহমান

সম্পাদকীয়

বিজনেস ভিসা ফের চালু ভারতের
বিজনেস ভিসা ফের চালু ভারতের

পেছনের পৃষ্ঠা

তারেক রহমানের জন্মদিন আজ
তারেক রহমানের জন্মদিন আজ

প্রথম পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

একটি জন্মদিন, একটি মৃত্যুদণ্ডের রায় ও আগামীর বাংলাদেশ
একটি জন্মদিন, একটি মৃত্যুদণ্ডের রায় ও আগামীর বাংলাদেশ

সম্পাদকীয়

যে জয় শিরোপার চেয়ে দামি
যে জয় শিরোপার চেয়ে দামি

মাঠে ময়দানে

বিএনপি জামায়াতের জমজমাট প্রচার
বিএনপি জামায়াতের জমজমাট প্রচার

পেছনের পৃষ্ঠা

ভারতের বিপক্ষে জয়ে জাতীয় দলকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
ভারতের বিপক্ষে জয়ে জাতীয় দলকে প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

মাঠে ময়দানে

নিরপেক্ষ ভোটের প্রতিশ্রুতিতে অটল
নিরপেক্ষ ভোটের প্রতিশ্রুতিতে অটল

প্রথম পৃষ্ঠা

অক্টোবরে সড়কে নিহত ৪৪১ জন
অক্টোবরে সড়কে নিহত ৪৪১ জন

পেছনের পৃষ্ঠা

শ্বেতপত্রের ক্ষেত্রে উপদেষ্টামণ্ডলী উৎসাহিত হননি
শ্বেতপত্রের ক্ষেত্রে উপদেষ্টামণ্ডলী উৎসাহিত হননি

প্রথম পৃষ্ঠা

মান ঠিক রাখতে গিয়ে কমেছে উৎপাদন
মান ঠিক রাখতে গিয়ে কমেছে উৎপাদন

পেছনের পৃষ্ঠা

রং বদলাচ্ছে স্থলপদ্ম
রং বদলাচ্ছে স্থলপদ্ম

পেছনের পৃষ্ঠা

আইন লঙ্ঘন করে রেলে দরপত্র
আইন লঙ্ঘন করে রেলে দরপত্র

নগর জীবন

জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠক ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের
জামায়াত আমিরের সঙ্গে বৈঠক ফ্রান্স রাষ্ট্রদূতের

প্রথম পৃষ্ঠা

রাজসাক্ষীর রোমহর্ষক জবানবন্দি
রাজসাক্ষীর রোমহর্ষক জবানবন্দি

পেছনের পৃষ্ঠা

আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা
আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

পেছনের পৃষ্ঠা

দেড় লাখ মানুষের দেশ কুরাসাও বিশ্বকাপে
দেড় লাখ মানুষের দেশ কুরাসাও বিশ্বকাপে

মাঠে ময়দানে

রোজ গার্ডেন কেনায় ৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতি
রোজ গার্ডেন কেনায় ৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতি

পেছনের পৃষ্ঠা

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বিজয়ী করতে সমাবেশ করবে আট দল
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বিজয়ী করতে সমাবেশ করবে আট দল

পেছনের পৃষ্ঠা

ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সতর্ক পাকিস্তান -খাজা আসিফ
ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সতর্ক পাকিস্তান -খাজা আসিফ

পূর্ব-পশ্চিম

ব্যবসায়ীদের কুপিয়ে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই
ব্যবসায়ীদের কুপিয়ে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই

পেছনের পৃষ্ঠা

অবশেষে রিচির স্বপ্নপূরণ
অবশেষে রিচির স্বপ্নপূরণ

শোবিজ

ডেঙ্গু টিকা নিয়ে কী ভাবছে সরকার
ডেঙ্গু টিকা নিয়ে কী ভাবছে সরকার

পেছনের পৃষ্ঠা

চাপে ডিজিটাল নীতিমালা শিথিল করছে ইইউ
চাপে ডিজিটাল নীতিমালা শিথিল করছে ইইউ

পূর্ব-পশ্চিম

বিজেএমসির হাজার কোটির সম্পদ লুটের অভিযোগ
বিজেএমসির হাজার কোটির সম্পদ লুটের অভিযোগ

পেছনের পৃষ্ঠা

মামলার জালে শোবিজ তারকারা
মামলার জালে শোবিজ তারকারা

শোবিজ

রাজনৈতিক পরিচয়ে অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজি
রাজনৈতিক পরিচয়ে অপ্রতিরোধ্য চাঁদাবাজি

প্রথম পৃষ্ঠা